LOVE IS BLIND- A VAMPIRE'S LOVE STORY | PART-02




বাসায় চলে আসার পর অরিত্রি ভাবতে শুরু করলো কি হচ্ছে ওর সাথে এসব। এসব ভাবতে ভাবতেই আবার তৎক্ষণাৎ ফোনটা বেজে উঠল অরিত্রি চমকে উঠল! আর ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাস থেকে শোনা গেল,

 -অরিত্রি কতদিন হয়ে গেল বইতো ছাপাতে হবে নাকি। তুমি তো এখনও বইয়ের পাণ্ডুলিপিটা আমাদেরকে দাও নি তাহলে কিভাবে বই ছাপানো হবে?

-আমাকে আর কয়েকটা  দিন সময়দিন অরিন্দম,দা। 

-কি হয়েছে অরিত্রী তুমিতো কখনও কোন বই দেয়ার আগে এত সময় নাও না। 

-আসলে  তেমন কিছুনা এই কয়েকদিন  ঠিক করে লিখতে পারছি না। লেখাতে কনসেনট্রেট করতে পারছিনা। তবে আমি খুব শীঘ্রই লেখা কমপ্লিট করে আপনার কাছে পাঠিয়ে দেবার ব্যবস্থা করব। 


ফোনটা রেখেই অরিত্রি ভাবতে শুরু করলো না এসব নিয়ে ভেবে কাজ নেই বই টা কমপ্লিট করতে হবে এখনো অনেক লেখা বাকি।  কিন্তু কিছুতেই যে লেখায় মন বসাতে পারছে না। ভাবছে কে এই রাহুল ছেলেটা কেনইবা ওর ছায়া দেখা গেল না।  যদিও কোনো অশুভ শক্তি হয়েই থাকে তাহলে এতদিন ওর কোন ক্ষতিই বা কেন করল না বরং ওর জীবন  বাঁচালো? 


এসব ভাবতে ভাবতে কখন অরিত্রী ঘুমিয়ে পড়েছে টেরও পায়নি সকাল ভোরে যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন নিজেকে আবিষ্কার করে মেঝেতে। কিন্তু ওর স্পষ্ট মনে আছে ও বিছানাতেই শুয়েছিল তাহলে মেঝেতে কি করে আসলো? ও ভাবল হয়ত বিছানা থেকে পড়ে গিয়েছিলাম তবে টের পাইনি।  


যাইহোক এবার ফ্রেশ হয়ে সকালের নাস্তা করে নিতে হবে। কাজের বুয়া এসে  সব কাজ করে দেয়ার পর চলে গেল। অরিত্রির সারাদিন কেটে গেল শুধু একটা প্রশ্ন মনের মধ্যে ঘুরপাক খেতে খেতে। কেন রাহুলে ওর জীবন বাঁচালো কে রাহুল  ওকে জানতেই হবে এসব প্রশ্নের উত্তর। 

তাই আজ সন্ধ্যেয় অরিত্রির ছাদে চলে গেল প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে কিন্তু গিয়ে প্রতিদিনের মতো রাহুলকে দেখতে পেল না রাহুল আজ নেই ছাদে।

পেছন ফিরতেই অরিত্রি দেখতে পেল রাহুলকে। এবার অরিত্রর মনে থাকা সব প্রশ্ন করল রাহুলকে তবে রাহুল কোনো উত্তর দিল না শুধু নির্বাক হয়ে চেয়ে রইলো অরিত্রির দিকে কিছুক্ষণ পর রাহুল বলতে শুরু করল…


-অরিত্রি আমি তোমাদের মত সাধারন মানুষ নই। আমি রক্তচোষা বাদুর যাকে তোমরা মানুষেরা ভ্যাম্পায়ারও বলে থাকো।  যেদিন আমি তোমাকে প্রথম ছাদে দেখি আমার অনেক ভালো লাগে তোমাকে আমি জানি আমি  সাধারণ মানুষ নই। তাই যেদিন তুমি আমাকে আমার নাম জিজ্ঞাসা করেছিলে প্রথম আমি কিছুই বলতে পারিনি শুধু নির্বাক হয়ে তোমার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। অরিত্রি আমি তোমাকে পছন্দ করি। তোমার সাথে আমি সারা জীবন থাকতে চাই। 


এসব শুনে অরিত্রি যেন আকাশ থেকে পড়লো কি হচ্ছে এসব ওর সাথে। না, আর এক মুহূর্ত নয় যত শীঘ্র সম্ভব ছাদ থেকে চলে যেতে হবে নইলে বিপদ আসন্ন এটা অরিত্রির মন বলছিল। অরিত্রি যখন নিচে চলে আসতে ছিল তখন পেছন ফিরে দেখল রাহুলের এক অন্য রকম চেহারা যে দেখতে এত সুন্দর ছেলে। তবে এখন ওকে দেখে মনে হচ্ছে যেন নরখাদক বিশ্রি এক ধরনের চেহারা। যা দেখলে সাধারন মানুষের জ্ঞান ধরে রাখা কষ্টসাধ্য  অরিত্রি ও জ্ঞান হারিয়ে ফেলল।


জ্ঞান ফেরার পর অরিত্রি নিজেকে নিজের বিছানায় দেখতে পেল। কাল রাতের ঘটনা গুলো ওর চোখে এখনো ভাসছে এবার ও ওর মাকে ফোন দেবে বলে ভাবছেন তবে ওর মা জানতে পারলে আরও বেশি দুশ্চিন্তা করবেন এবং ওকে একা থাকতে দেবেনা। অরিত্রি ভাবলো যা করার ওকে নিজেকেই করতে হবে। অরিত্রি ভাবলো আর ছাদে যাওয়া যাবে না। যত সমস্যার ছাদে না গেলে হয়তো সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। 


অনেকদিন ধরে অরিত্রি ছাদে যাচ্ছেনা কিন্তু তবু কোথায় যেন একটা শুন্যতা রয়ে গেছে কেন যেন অরিত্রী রাহুলকে ভুলতে পারছেনা। কোন কিছু করতে গেলেই রাহুলের সাথে কাটানো সময় গুলোর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। অরিত্রি মনে মনে ভাবতে শুরু করলো তাহলে কি আমি রাহুল কে ভালবেসে ফেলেছি। কিন্তু রাহুল তো আর পাঁচটা মানুষের মতো নয় এসব তাহলে কিভাবে  ভাবতে পারে।


অরিত্রি আবার ভাবল ও ছাদে যাবে কেন এমন হচ্ছে নিজের সাথে হয়তো সেসবের উত্তর রাহুলের জানা আছে। 

আবার অরিত্রি ছাদে গেল কিন্তু এবার রাহুলকে দেখি ও চমকে উঠল কেননা রাহুলের চোখে পানি পড়ছে...রাহুল কাঁদছে। কিন্তু কেন কাঁদে রাহুল?  

-অরিত্রি আমি তোমাকে অনেক ভালবেসে ফেলেছি। তুমি  আসোনি কেন আমি প্রতিটা রাত তোমার অপেক্ষায় ছিলাম তুমি কেন বুঝতে পারছ না আমি তোমাকে সত্যিই অনেক ভালবাসি। আমি যদি তোমার ক্ষতি করতে চাইতাম তাহলে কি তোমার ক্ষতি করতে পারতাম না বল। 


-দেখো তুমি যেসব বলছো সেটা কখনোই সম্ভব না তুমি আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের মত নও। দয়া করে আমার জীবন থেকে তুমি চলে যাও আমিও কোন কিছুতেই ঠিক করে মন বসাতে পারছি না তোমার সাথে আমার বন্ধুত্ব এতটাই গভীর হয়ে গেছে যে এখন আমিও তোমাকে ছাড়া অন্য কিছু ভাবতে পারছিন।  কিন্তু যা কখনো হয়না তা নিয়ে ভেবেই বা কি লাভ বল। 


রাহুল বলল -

-আচ্ছা অরিত্রি তাই হবে তুমি যখন চাও না আমি তোমার সামনে আসি। আমি আর কখনো তোমার সামনে আসব না। আমি চলে যাচ্ছি তোমার থেকে অনেক দূরে।  ভালো থেকো! 



অনেকটা দিন কেটে গেছে এবার কিন্তু কিছুতেই অরিত্রি রাহুলের কথা ভুলতে পারছেনা। ছাদেও এখন আর রাহুল আসেনা। রাহুলকে যে খুব মনে পড়ে ওর কি করবে এখন অরিত্রি। রাহুলকে ও ভালোবেসেছে তা-ও এতদিনে ভালোই বুঝতে পেরেছে কিন্তু এখন তো আর কিছু করার নেই রাহুল যে হারিয়ে গেছে ওর জীবন থেকে। 


একদিন বিকেলবেলা বসেছিল অরিত্রি রাহুলের কথা ভাবছিল। হঠাৎ  রাহুলকে সামনে দেখতে পেয়ে অরিত্রী আনন্দে আত্মহারা হয়ে উঠল। দৌড়ে  ওকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো বললো আমি তোমাকে হারিয়ে ফেলেছিলাম তবে আর হারাতে চাই না সারা জীবন আমি তোমার কাছে থাকতে চাই। আজ অরিত্রি রাহুলকে বলে দিলো  ওর মনের কথা। 


রাহুল ও পেয়ে গেল তার ভালোবাসার মানুষকে। 


 অনেকদিন পর….


 অরিত্রির কোলে ছোট্ট একটি ফুটফুটে ছেলে শিশু হাসছে। অরিত্রি আর রাহুলের ছেলে। ছেলের নাম রেখেছে ওরা 'তিয়াস'। 


বেঁচে থাকুক পৃথিবীর সকল ভালোবাসা। ভালোবাসা সত্যিই জাতি-ধর্ম-বর্ণ কিছুই বুঝতে চায় না শুধু বুঝতে পারে সে তার ভালোবাসার মানুষকে কতটা ভালোবাসো। 


Author- Raj Ahmed Turjo

STORYLANDBD
STORYLANDBD

This is a short biography of the post author. Maecenas nec odio et ante tincidunt tempus donec vitae sapien ut libero venenatis faucibus nullam quis ante maecenas nec odio et ante tincidunt tempus donec.

No comments:

Post a Comment