স্বামী ও স্ত্রীর রক্তের
গ্রুপ নিয়ে যত ভ্রান্ত ধারনা-
আমাদের সমাজে অনেকেই বলে থাকেন বা মনে করেন স্বামী ও স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ এক
হলে সন্তান জন্মদানে সম্যস্যা হয়। এটা কি সঠিক? না মোটেই সঠিক নয়। সঠিক উত্তরটি হলো -
"কোনো সমস্যাই হয় না। হওয়ার কোনো কারণও নেই। আমরা জানি - সারা দুনিয়ায় ৩৬%
"ও" গ্রুপ, ২৮ ভাগ "এ" গ্রুপ, ২০% "বি" গ্রুপ।
কিন্তু এশিয়াতে প্রায় ৪৬% মানুষের রক্তের গ্রুপ "বি"। এশিয়ায় নেগেটিভ
ব্লাড গ্রুপ ৫%, সেখানে ইউরোপ আমেরিকাতে প্রায় ১৫%।
যেখানে
সিংহভাগ রক্তের গ্রুপ বি আমাদের দেশে। সেখানে স্বামী-স্ত্রীর রক্তের গ্রুপের মিল
হবে সেটাই স্বাভাবিক। এতে কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু যদি স্ত্রীর নেগেটিভ রক্তের
গ্রুপ থাকে এবং স্বামীর পজিটিভ গ্রুপ থাকে অর্থাৎ স্ত্রীর
যদি A-, B-, AB-, O- গ্রুপের
রক্ত হয় এবং স্বামীর যদি A+, B+, AB+, O+,
গ্রুপের রক্ত হয় তাহলে সমস্যা হয়ে থাকে। যাকে Rh
Isoimmunization বলে। সেটারও সহজ চিকিৎসা বা টিকা আছে। অনেকের ভ্রান্ত
ধারনা - বাবা মায়ের রক্তের গ্রুপ এক হলে বাচ্চার থ্যালাসেমিয়া হয়। এটাও সম্পূর্ণ
ভুল ধারনা। কারণ, থ্যালাসেমিয়া রোগ ক্রোমোজোম এবনরমালিটি থেকে হয়।
তাহলে আসুন জেনে নিই কেনো স্ত্রীর নেগেটিভ রক্তের
গ্রুপ এবং স্বামীর পজিটিভ গ্রুপ থাকলে সমস্যা
হয়ঃ সন্তানসম্ভবা মহিলাদের ক্ষেত্রে Rh ফ্যাক্টর খুব
গুরুত্বপূর্ণ। এখন ভাবতে পারেন Rh ফ্যাক্টর কি? রক্তকণিকায় Rh ফ্যাক্টরের উপস্থিতি ও অনুপস্থিতির উপর
ভিত্তি করে রক্তের শ্রেণীবিন্যাস বা ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় করা হয়। Rh ফ্যাক্টরবিশিষ্ট
রক্তকে Rh+ (Rh পজেটিভ) এবং Rh ফ্য়াক্টর অনুপস্থিত রক্তকে Rh- (Rh নেগেটিভ) রক্ত বলে।
এবার মূল কথা বলি, একজন Rh- (Rh নেগেটিভ) মহিলার সঙ্গে Rh+ (Rh পজেটিভ) পুরুষের বিয়ে হলে তাদের প্রথম সন্তান
হবে Rh+, কারন Rh+ একটি প্রকট
বৈশিষ্ট। ভ্রূণ অবস্থায় সন্তানের Rh+ ফ্যাক্টরযুক্ত রক্ত অমরার মাধ্যমে
মায়ের রক্তে এসে পৌছাবে, ফলে মায়ের রক্ত Rh- হওয়ায় তার রক্তরসে অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টর
(অ্যান্টিবডি) উৎপন্ন হবে। অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টর মায়ের রক্ত থেকে অমরার মাধ্যমে ভ্রুণের রক্তে প্রবেশ
করলে ভ্রুণের লোহিত রক্ত কণিকাকে ধ্বংস করে, ভ্রুণও বিনষ্ট হয় এবং গর্ভপাত ঘটে। এ
অবস্থায় শিশু যদি জীবিতও থাকে তার দেহে প্রচন্ড রক্তস্বল্পতা ও জন্মের পর জন্ডিস
রোগ দেখা দেয়।
এ অবস্থাকে এরিথ্রোব্লাস্টোসিস ফিটালিস (erythroblastosis foetalis) বলে।
যেহেতু Rh বিরোধী অ্যান্টিবডি মাতৃদেহে খুব ধীরে ধীরে উৎপন্ন হয় তাই
প্রথম সন্তানের কোন ক্ষতি হয় না এবং সুস্থই জন্মায়। কিন্তু পরবর্তী গর্ভধারন থেকে বিপত্তি শুরু হয়
এবং এ রোগে ভ্রুণ মারা যায়। তাই বিয়ের আগে বর-কনের রক্ত পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত।
তবে সুখের কথা এই যে, পৃথিবীর বেশীর ভাগ মানুষের
No comments:
Post a Comment