কে আপনি? | Who are you




মাঝ রাতে ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙলো মেঘের। কেউ ফোন দিচ্ছে, অপরিচিত নাম্বার। ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে ভেসে এলো একটি ছেলের কন্ঠ,
-হ্যালো মেঘ, শুভ জন্মদিন। 
-আমার জন্মদিন তো চলে গেছে।
-ঘড়িতে তাকিয়ে দেখো এখনো বারোটা বাজেনি।
-ওহ হ্যা ১১:৫৮ বাজে। যাইহোক ধন্যবাদ। কিন্তু আপনি কে?
-উমম, এই প্রশ্নের উত্তর দেয়াটা একটু কঠিন। তুমি আমাকে চিনবেনা।
-তাহলে এতো রাতে আমাকে ফোন করলেন যে।
-আরো আগেই ফোন করতাম কিন্তু তোমার নাম্বার যোগাড় করতেই দেরি হয়ে গেলো। যাইহোক একটু জানালার কাছে আসবে?
-মানে কি আপনি আমার বাসাও চেনেন?
-হ্যা আমি তোমার সম্পর্কে সবই জানি আর তোমার সব প্রশ্নের উত্তর আমি দেবো, আগে জানালায় এসো তাড়াতাড়ি, বারোটা বেজে গেল।    
-মেঘ বিছানা থেকে উঠে জানালায় গিয়ে দাড়ালো। 
নিচে কেউই নেই পুরো রাস্তা অন্ধকার। হঠাৎই শব্দ আতশবাজির। আকাশে বিভিন্ন রঙের আতশবাজি দেখা যাচ্ছে। এমনকি সেই আতশবাজিতে মেঘের নাম লেখা। আতশবাজি মেঘের অনেক পছন্দ। এবার জানালার সামনে দিয়ে কিছু বেলুন উড়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে কিছু বাধা রয়েছে। ফোনের ওপাশ থেকে ছেলেটা বলল,
-আরে তাড়াতাড়ি বেলুনটা ধরো না হলে উপহারটা সহই বেলুনটা আকাশে উড়ে যাবে। 
মেঘ বেলুনগুলো ঘরের ভেতর টেনে নিলো। এরকম অদ্ভুত উপহার মেঘ এর আগে কখনোই পায়নি। একি সাথে অনেক আনন্দিত আবার অবাকও। কে এই ছেলেটা?
-মেঘ উপহারটা খুলে দেখো। আশা করি পছন্দ হবে।
-সেগুলো পরে হবে আগে বলুন আপনি কে?
-আমি কে বললাম তো বলবো, আগে উপহারটা তো খোলো। 
-কাচের চুড়ি।
এটা মেঘের অনেক পছন্দের। এতো কিছু ছেলেটা কিভাবে জানলো। 
-মেঘ এবার একটু দরজাটা খোলো।
-কিহ? আপনি এতোকিছু পাঠিয়ে আমার বাসায় আসার চেষ্টা করছেন?
-আরে না না। ভুল বুঝছো আমাকে। তুমি একটু গিয়ে দেখো নিরাশ হবেনা।
মেঘ টিপটিপ পায়ে এগিয়ে যাচ্ছে। ভয়ও হচ্ছে। একটা অজানা মানুষ এতো কিছু করছে কেন এসব ভেবে।
দরজাটা খুলে দেখলো কেউ নেই। দরজার সামনে কেক, ফুল সাথে একটি চিঠি। সবকিছুই তার পছন্দের। আবারও ফোন বাজছে।
-আচ্ছা আপনি কে বলেন তো। আর এতোকিছু কেন?
-আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। গত দুই বছর ধরে। কিন্তু বলার সাহসই করতে পারিনি। আজকে যে তোমাকে বলার উদ্দেশ্যে এসেছি তা না। আমি শুধু তোমার বিশেষ দিনটাকে তোমার জন্য আরেকটু বিশেষ করতে চেয়েছি। 
যেখানে সবাই আমার জন্মদিনটাই ভুলে গেছে সেখানে ছেলেটা এতোকিছু করেছে আমার জন্য। আমার ছোট ছোট ভালোলাগা গুলো সে জানে। আমার মন খারাপ জেনেই ছেলেটা সব ভয় কাটিয়ে চলে এসেছে। 
-আচ্ছা আপনি আমার জানালার সামনে আসুন তো।
-বকবে না তো আবার।
-না, কিছু বলবোনা। আপনি আসুন।
এবার ছেলেটার মুখ দেখতে পাবো। সেই ধৈর্যশীল মানুষ যে কিনা দুবছর ধরে আমাকে ভালোবেসেছে।
-মেঘ এই মেঘ…..
মেঘ তাকিয়ে দেখছে। একটি মেয়ে। একি তন্নি।
-মানে কি তুই কি করছিস।
-আমি কি করছি মানে। সেই ধরে ঘুমের মধ্যে কি বিড়বিড় করছিস তুই।
স্বাভাবিক হতে কিছুক্ষন সময় লাগলো৷ তারপর বুঝতে পারলো যে সে এতোক্ষন স্বপ্ন দেখছিলো। ছেলেটার চেহারা দেখার আগেই ঘুম ভেঙে গেলো। 
আজ মেঘের জন্মদিন। সত্যি সত্যিই সবাই ভুলে গেছে। কিন্তু আফসোস হচ্ছে এই ভেবে যে ছেলেটার চেহারা দেখা হলোনা। সেটা স্বপ্ন না হয়ে যদি বাস্তব হতো। 
এসব ভাবতে ভাবতেই পুরো দিন পার হয়ে গেলো। মেঘ ঘুমিয়ে পরেছে। হঠাৎ ফোন বাজছে।
-হ্যালো।
-তাড়াতাড়ি জানালায় আয়…


         
  
                   

STORYLANDBD
STORYLANDBD

This is a short biography of the post author. Maecenas nec odio et ante tincidunt tempus donec vitae sapien ut libero venenatis faucibus nullam quis ante maecenas nec odio et ante tincidunt tempus donec.

No comments:

Post a Comment