Holiday Detection
প্রথম দিকে মাথাটা ভার ভার লাগছিল। এ বার মাথাটা কাজ করেছে। ব্যাগটা সাথেই আছে। পকেটে হাত দিয়ে দেখল মোবাইল আর মানিব্যাগটা নেই। ভেরীগুড প্লানটা ঠিকঠাক ভাবেই কাজ করেছে। ব্যাটা টোপ গিলেছে ভাবল অর্জুন খুব খিদে পেয়েছে। ব্যাগ থেকে পাউরুটি আর কোক বের করে খেল। আসলে খাওয়ার জন্য নয়। শয়তান-গুলোকে ধোকা দিতেই খাবারগুলো ব্যাগে রেখেছিল তবে কাজে লেগে গেল। যেই ঘরে বন্দী রয়েছে বোধহয় তার দূর-দূরান্ত পর্যন্ত কোনো গ্রামে নেই। এবার কয়েকদিন আগের কথা ঘটনার শুরুর দিকটা বলি.....
অর্জুন সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। সবে প্রমোশন হয়েছে ক্যাপ্টেন পদে। এসেছিল কয়েক দিনের ছুটি কাটাতে সেদিন সকালে ব্রেকফাস্ট করতে করতে খবরে দেখল নির্দলীয় প্রার্থী ইকবাল খানকে কাছের টিলা পাহাড় থেকে গুলি করা হয়। পরে তিনি হসপিটালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আর দুপুরের খবরে দেখল, ঐ টিলায়ই পাওয়া গেছে বিদেশী ফটোগ্রাফার হ্যারি ম্যানলির লাশ। খুব বেশীক্ষণ হয়নি সে খুন হয়েছে।
অর্জুন আর্মিতে চাকরি করলেও ইদানিং শখের গোয়েন্দা হিসেবে বেশ সুনাম অর্জন করেছে। বিকেলে ওর বন্ধু তাসকিন দেখা করতে আসে। তাসকিন পুলিশে চাকরি করে। তাসকিন বলল, ইদানিং ইকবাল সাহেব প্রায় হিরো হয়ে উঠেছিলেন তাই এমন হলো। দেখলিতো কি রকম জায়গায় দুটো। এই রহস্যও আমরা ভেদ করব। আর তোরা শুধু আরামে দাড়াও, সোজা হও আর কমান্ড অনুযায়ী গুলি চালাতে জানিস। মাথা খাটাতে জানিস না। পরদিন সকালে একজন লোক আসে অর্জুনের কাছে। তার কথা মত বোঝা গেল, সে হচ্ছে ইকবাল খন্দকারের পি.এ। আর এই মৃত্য রহস্যটা সমাধানের দায়িত্ব তিনি দিতে চান। অর্জুন রাজি হল। লোকটার নাম মিরাজ শেখ। তিনি অর্জুনকে তার বাড়িতে শিফট করার জন্য খুব সাধাসাধি করলেন। পরে অর্জুন বিরক্ত হয়ে বলল, সময়মত সব হবে। বাইরে পুলিশের গাড়ির শব্দ পাওয়া গেল। দরজা খুলে ওকে উদ্ধার করল তাসকিন আর মিরাজ শেখ। মিরাজ শেখ বলে উঠল, দেখুন কিভাবে শয়তানগুলো ওনাকে আটকে রেখেছিল। অর্জুন বলল, কিন্তু মিরাজ সাহেব আসল শয়তান তো আমার সামনে। তাসকিন, মিরাজ সাহেবের হাতদুটো বেঁধে ফেল। কথা শুনে তো তাসকিনের আক্কেলগুড়ুম। ও বলল, তার মানে? তার মানে, ইকবাল খন্দকারের খুনের অপরাধে মিরাজ শেখকে এ্যারেস্ট। হঠাৎ মিরাজ তাসকিনের কোমরের রিভলবার অর্জুনের দিকে তাক করল। কিন্তু কেউ কিছু বোঝার আগেই অর্জুন এক লাথি ঝাড়ল। লাগল মিরাজের পেটে। সে পড়ে গেল। তাসকিন হ্যান্ডকাপ পরিয়ে দিল।
আজ তাসকিন আর অর্জুন একসাথে বসে এই রহস্যটা নিয়ে কথা বলছে। তাসকিন বললো ব্যাপারটা শুরু থেকে বল। অর্জুন বলল, আসলে ইকবাল খন্দকার খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল তাই বিরোধী দলের তা সহ্য হচ্ছিল না। তারা টাকার লোভ দেখিয়ে হাত করে মিরাজ শেখকে তথ্য পাচার করার জন্য। আর সেদিন একটা মিটিং শেষে ফেরার পথে একজন শূট্যার টিলার উপর থেকে স্নাইপার দিয়ে ইকবাল সাহেবকে গুলি করে। আর তখনই সেই ছবিগুলো চলে আসে ফোটোগ্রাফার হ্যারির ক্যামেরায়। তাই তাকেও খুন করে। তাসকিন জিজ্ঞেস করল, কিন্তু তুই মিরাজকে কেন সন্দেহ করলি ?
আজ তাসকিন আর অর্জুন একসাথে বসে এই রহস্যটা নিয়ে কথা বলছে। তাসকিন বললো ব্যাপারটা শুরু থেকে বল। অর্জুন বলল, আসলে ইকবাল খন্দকার খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল তাই বিরোধী দলের তা সহ্য হচ্ছিল না। তারা টাকার লোভ দেখিয়ে হাত করে মিরাজ শেখকে তথ্য পাচার করার জন্য। আর সেদিন একটা মিটিং শেষে ফেরার পথে একজন শূট্যার টিলার উপর থেকে স্নাইপার দিয়ে ইকবাল সাহেবকে গুলি করে। আর তখনই সেই ছবিগুলো চলে আসে ফোটোগ্রাফার হ্যারির ক্যামেরায়। তাই তাকেও খুন করে। তাসকিন জিজ্ঞেস করল, কিন্তু তুই মিরাজকে কেন সন্দেহ করলি ?
মিরাজ আসলে ভাল মানুষ সাজতে চেয়েছিল। কিন্ত ও প্রথম ভুল করে ওর বাড়িতে শিফট করার জন্য সাধাসাধি করে। কেননা যদি একজন গোয়েন্দা কে ও নিজের বাড়িতেই উঠায় তাহলে তো ক্রিমিন্যালরা আরো সতর্ক হয়ে যাবে। ও চেয়েছিল ওর নিজের ফেঁসে যাবার কোনো ক্লু থাকলে কিনা তা আমার মাধ্যমে জেনে নিতে। তাই ওকেই একটু চোখে চোখে রাখলাম তারপর আবার সেই ছবির রোলটাও পেয়ে যাই আমি আর ওই শ্যূটারের সঙ্গে এক দোকানে আমি মিরাজকে দেখি এরপর একদিন দেখি, মিরাজ, শ্যূটার আর এক বিরোধী নেতা একটা বাড়িতে যাচ্ছে। আমিও ওদের পিছে পিছে যাই। এক তবে লুকোতে লুকোতে একসময় ডুকে পড়ি ওদের ওয়াশরুমে তখনি ওই শ্যূটার এসে ঢোকে সেখানে। আমি ওকে পিস্তল দেখিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দেই আর ঝরনাসহ সবগুলো পানির কল খুলে দেই যাতে কেউ কোনো শব্দ না পায়। ব্যাটা আমার পিস্তল ফেলে দেয়। মারামারি চলতে থাকে। একসময় সাবানে পিছলে আমি পড়ে যাই আর ও আমার বুক পা দিয়ে চেপে ধরে। ভাবি বুটজুতার চাপে জ্ঞান হারাই। কিন্তু তার আগে আমি আমার মোবাইলে ইন্টারনেট থেকে কিছু পিকচার ডাউনলোড করে একটা সফটওয়্যার দ্বারা এমন কিছু ছবি বানিয়ে রেখেছিলাম যা থেকে মনে হবে যে আমি ওদের সন্দেহ করিনি। আর অজ্ঞান হওয়ার পর ওরা সার্চ করে ওই ছবি গুলো দেখে বোকার মত বিশ্বাস করে দ্বিতীয় ভুল করে। আর তৃতীয় ভুল করে আমাকে আটকে রেখে আবার তোর সাথে উদ্ধার করতে এসে। তাসকিন বলে এটা আবার কিসের ভুল? ও তো ঠিকই এখানে ভালো সাজতে পারতো। অর্জুন বলল, আরে ভুল তো এই ভাল সাজতে গিয়েই, ধরা পড়ে গেল। না হলে তো ও পগার পার হয়ে, বাঁচলেও বাঁচতে পারত। তাসকিন বলল, তা কি যেন রেকর্ড করেছিল সেটা দে কোর্টে জমা দিতে হবে তো। অর্জুন তার হাতের ঘড়িটা খুলে দেয়। আর বলে, শ্যূটারও একটা ভুল করেছে। হ্যারির ক্যামেরায় রোলটা পরীক্ষা না করেই ড্রেসটায় করে কিন্তু সে জানত না ওটা নতুন রোল। তাসকিন বলে, তোর ঘড়ি দিয়ে কি করব? আরে এটা পাকিস্তানি প্রোডাক্ট স্মার্টওয়াচ হেসে বলে, যাই বল, মিরাজ যতই পগার পার হত ঠিকই ধরে আনতাম। অর্জুন বলে, থাক বাবা তোমার বাহাদুরী আর দেখিও না। দেখলি তো আমরা শুধু ড্রিলই করি না বা গুলি চালাই না, মাথাটা তোদের চেয়ে বেশী খাটাই। তাই তো বলি ''Bangladeshi soldier never on holiday."
writer- Islam Saif
©Copyright 2018 storylandbd
No comments:
Post a Comment