Journey to the Bandarban
writer: Raj Ahmed Turjo
- নারে অর্ণব জীবনটা কেমন একঘেমি হয়ে গেছে। কোন আ্যডভেঞ্চার ছাড়া ভালো লাগছে না।
-ঠিক বলেছিস নাহিদ। আচ্ছা কোথাও থেকে ঘুরে আসলে কেমন হয়।
-কোথায় যাওয়া যায় বলতো?
-চল দোস্ত সুন্দরবন যাই।
-মাথা খারাপ, ওই সব বন্য এলাকায় আমি যাব না। পাহাড়ি এলাকায় যাব।
-তাহলে এমন যায়গায় যেতে হলে...চল বান্দরবান যাই।
-তাহলে চল বান্দরবান যাই।
-চল। আমার কোন সমস্যা নেই।
-তাহলে চল আজ রাতেই রওনা হই। আমাদের গাড়ি নিয়ে যাব।
-ফুয়াদকেও ডেকে নেই। দুজন গেলে মজা হবে না।
-ওকে। তাহলে আজ রাতে দেখা হচ্ছে। See you soon.
আমি দরজায় কলিং বেল বাজালাম। কাজের বুয়া বলল, কে। আমি বললাম, আমি নাহিদ। সে দরজা খুলে দিল। আমি ঘরে ঢুকেই মাকে বললাম, মা আমি বান্দরবান যাব ঘুরতে। মা গম্ভীর গলায় বলল কেন বান্দরবান যাবি কেন? বান্দরবান কি এমন আছে? আমি বললাম, কত সুন্দর পাহাড় রয়েছে, বিভিন্ন উপজাতি রয়েছে আরও কত কি। যাবি বেশ তা কেকে যাবি? আর কখন যাবি? আমি, অর্ণব আর ফুয়াদ। আর আজ রাতেই যাব। যাবি যখন ঠিক করেছিস তখন যা তবে সাবধানে যাবি, বলল মা। এবার আমি মাকে বললাম, মা আমাদের গাড়িটা লাগবে। মা বলল, কেন ট্রেনে যা, বাসে যা। তাহলে কি আ্যডভেঞ্চার হবে। আমাকে বলছিস কেন তোর বাবাকে বল। বাবাকে বলাতে বাবা এমন ভাব করল যেন তার একসাথে দুটো কিডনি চেয়ে বসেছি। তবে অনেক কষ্টে বাবাকে রাজি করালাম।
-ঠিক বলেছিস নাহিদ। আচ্ছা কোথাও থেকে ঘুরে আসলে কেমন হয়।
-কোথায় যাওয়া যায় বলতো?
-চল দোস্ত সুন্দরবন যাই।
-মাথা খারাপ, ওই সব বন্য এলাকায় আমি যাব না। পাহাড়ি এলাকায় যাব।
-তাহলে এমন যায়গায় যেতে হলে...চল বান্দরবান যাই।
-তাহলে চল বান্দরবান যাই।
-চল। আমার কোন সমস্যা নেই।
-তাহলে চল আজ রাতেই রওনা হই। আমাদের গাড়ি নিয়ে যাব।
-ফুয়াদকেও ডেকে নেই। দুজন গেলে মজা হবে না।
-ওকে। তাহলে আজ রাতে দেখা হচ্ছে। See you soon.
আমি দরজায় কলিং বেল বাজালাম। কাজের বুয়া বলল, কে। আমি বললাম, আমি নাহিদ। সে দরজা খুলে দিল। আমি ঘরে ঢুকেই মাকে বললাম, মা আমি বান্দরবান যাব ঘুরতে। মা গম্ভীর গলায় বলল কেন বান্দরবান যাবি কেন? বান্দরবান কি এমন আছে? আমি বললাম, কত সুন্দর পাহাড় রয়েছে, বিভিন্ন উপজাতি রয়েছে আরও কত কি। যাবি বেশ তা কেকে যাবি? আর কখন যাবি? আমি, অর্ণব আর ফুয়াদ। আর আজ রাতেই যাব। যাবি যখন ঠিক করেছিস তখন যা তবে সাবধানে যাবি, বলল মা। এবার আমি মাকে বললাম, মা আমাদের গাড়িটা লাগবে। মা বলল, কেন ট্রেনে যা, বাসে যা। তাহলে কি আ্যডভেঞ্চার হবে। আমাকে বলছিস কেন তোর বাবাকে বল। বাবাকে বলাতে বাবা এমন ভাব করল যেন তার একসাথে দুটো কিডনি চেয়ে বসেছি। তবে অনেক কষ্টে বাবাকে রাজি করালাম।
রাত তিনটায় আমি বাড়ি থেকে বের হলাম। সবার প্রথম ফুয়াদের বাসার সামনে থেকে ফুয়াদ উঠল গাড়িতে, তারপর অর্ণব।
শীতের দিন তাই আমরা সবাই শীতের পোশাক পরা। আমি সামনে বসে গাড়ি ড্রাইভ করছি। আর আমার পাশে অর্ণব আর পেছনে ফুয়াদ। একটা কথা বলে রাখি আমার বন্ধু ফুয়াদ একটু বোকা ধরনের আর অর্ণব ধুর্ত হলেও ওর দুর্বল জায়গা মেয়েরা। মেয়ে দেখলেই ........ যাইহোক আর কিছুক্ষনের মধ্যে সকাল হয়ে যাবে।
অর্ণব বলল......
-দোস্ত এটা টুরিস্ট সিজন। তাই নিশ্চয়ই মেয়েরা ঘুরতে আসবে আর তার মধ্যে থেকে যদি কোনটাকে গার্ল-ফ্রেন্ড বানিয়ে ফেলতে পারি.....তাহলে তো কোন কথাই নেই।
-আচ্ছা তুই মেয়ে ছাড়া কিছু বুঝিস না নাকি? তুই কি ভুলে গেলি পেছনের কথা। একটা মেয়ে তোর কি হাল করে ছেড়েছিল। তোর টাকা-পয়সা, জামা-প্যান্ট সব নিয়ে তোকে একটা আন্ডার প্যান্ট পড়িয়ে রেখে দিয়েছিল।
-দোস্ত Past is past. সেই কথা আমি আর মনে করতে চাই না।
ফুয়াদ তখনো ঘুমিয়ে রয়েছে গাড়িতে কিছুক্ষন পর ঘুম থেকে উঠে ফুয়াদ বললো.....
-Good morning দোস্ত।
-এই তুই কি ঘুমানোর জন্য বান্দরবান যাচ্ছিস। সারাক্ষন শুধু ঘুমাস। আরে ব্যাটা আমরা মজা করতে যাচ্ছি ঘুমানোর জন্য নয়। অর্ণব বললো।
-দোস্ত টায়ার্ড ছিলাম তো তাই। আর ঘুমাবো না।
এরই মধ্যে আমরা ঢাকা থেকে চোদ্দগ্রাম চলে এসেছি। ফুয়াদ বললো....
-দোস্ত খুব ক্ষুদা লাগছে তো।
আমাদেরও ক্ষুদা লাগছে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। তারপর খাবার অর্ডার দিলাম। এরই দেখতে পেলাম অন্য টেবিলে তিনজন মেয়ে বসে খাচ্ছে। অর্ণবের চোখ সেদিকে.....তারপর আমি বললাম.....
-এই ঐ দিকে তাকিয়ে আছিস কেন?
-দোস্ত পরীদের দেখেছিস কখনো এরা পরী। লাল, নীল, হলুদ পরী। দেখ ঐ হলুদ রংয়ের ড্রেস পরা মেয়াটা কত সুন্দর। আমি ওর বাপের জামাই হতে চাই। (বিষ্ময়ের সুরে বলল অর্ণব)
অর্নব ওদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে খাবার মুখে না দিয়ে ওর শার্টে ভরাচ্ছে।
-ওদিকে না তাকিয়ে ঠিকমতো খাবার খা। দেখ ফুয়াদ কান্ডে-পিন্ডে গিলছে। যেন কত বছর ধরে খাবার খায় না।
-দোস্ত খুব ক্ষুদা লাগছে তো তাই। ফুয়াদ বললো।
এরই মধ্যে নীল ড্রেই পরা মেয়েটা এসে বলল.....
-আপনাদের সমস্যা কি? তখন থেকে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছেন।
এবার অর্ণব বললো.......
-কৈ আমি তো ঐ হলুদ রংয়ের ড্রেস পরা যিনি তার দিকে তাকিয়ে আছি। আপনি বলেন না ওর নামটা কি?
-থাপ্পর দিয়া ৩২টা দাঁত ফালায়ে দিবো। আবার নাম জিজ্ঞাসা করেন। এই চলতো আমরা এখান থেকে চলে যাই। ইডিয়েট কোথাকার।
-দোস্ত আমাদের ইডিয়েট বলে চলে গেল। তুই কিছু বল।
তবে এতক্ষনে তো আমার একে ভালোলেগে গেছে। আমরাও বিল মিটিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে পড়লাম।
আমি যেই গাড়ি স্টার্ট দিবো এমন সময় নীল রংয়ের ড্রেই পরা মেয়েটা আমায় এসে বলল.....
-আপনারা কোথায় যাবেন?
-বান্দরবান।
-আমরাও বান্দরবান যেতে চেয়েছি কিন্তু কি জানেন আমাদের গাড়িটা হঠাৎ খারাপ হয়ে গেছে। আমাদের একটু বান্দরবান পর্যন্ত লিভ দেননা।
-এখন কেনো একটু আগে তো ইডিয়েট বললেন। অর্ণব বললো।
-আমি বললাম, আপনারা উঠুন।
-মেয়েটি বলল, Thanks. ড্রাইভার তুমি গাড়ি সারিয়ে ঢাকায় নিয়ে যেও। আমরা বান্দরবান যাচ্ছি।
সবাই গাড়িতে উঠল। নীল ড্রেই পরা যিনি ও তার বান্ধবীরা বসলেন মাঝখানের সিটেগুলোতে। আর সবার পেছনে ফুয়াদ আর আমার পাশে অর্ণব বসে আছে।
গাড়ি চলছে............
-আমি বললাম, আপনার নামটা?
-রিমি। আর ও নীতু, এবং ও যোথি।
-রিমি বলল, আপনার নামটা?
-নাহিদ। নাহিদ আহম্মেদ। আর তৎক্ষনাত অর্ণব নিজের নামটা নিজেই বলল জিজ্ঞাসা না করা সত্যেও। তারপর আমি বললাম আপনাদের পেছনে যে ঘুমাচ্ছে ওর নাম ফুয়াদ।
-ও।
অর্ণব শুধু লুকিং গ্লাসে পেছনের হলুদ রংয়ের ড্রেস পরা অর্থ্যাৎ নীতুর দিকে বারে বারে তাকাচ্ছে।
দুপুর দুইটায় আমরা চট্টগ্রাম এসে পোছলাম। সবাই মিলে খাবার খেতে একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম। অর্ণব দেখি নীতুর সাথে কথা বলার পুরোদমে চেষ্টা করছে কিন্তু নীতু কোন পাত্তা দিচ্ছে না ওকে। আমরা সবাই এক একটা টেবিলে খাচ্ছি। সেই আগের মত অর্ণব নীতুর দিকে তাকিয়ে আছে। নীতুও ওর দিক থেকে মুখটা ফিরিয়ে অন্য দিকে বসে খাওয়া শুরু করে।
এবার আবার সবাই গাড়িতে চেপে যাচ্ছি। গন্তব্যস্থান বান্দবানের নীলগিরি হিল রিসোর্ট। যেতে রাত ৯টার দিকে আমরা গিয়ে পোছালাম সেখানে। তারপর কটেজ বুক করলাম। আমাদের কটেজের থেকে রিমিদের কটেজ খানিকটা দূরে। রাতে আমি, অর্ণব আর ফুয়াদ ডিনার করে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ি টায়ার্ড ছিলাম বলে।
আমরা আমাদের কটেজে সকালের নাস্তা করছি এমন সময় দেখি রিমি আমাদের কটেজের দিকে আসছে। রিমি এসে বলল.....
-আজ আপনারা কি কোন জায়গা দেখতে যাবেন?
-আমি বললাম, হ্যাঁ ভাবছি নীলাচল যাবো। আপনারাও চাইলে আমাদের সাথে যেতে পারেন।
-তাহলে তো কোন সমস্যাই নেই।
-ভাবি সরি আপনাকে ভাবি বলে ফেললাম আসলে আমরা থাকতে আপনাদের কোন সমস্যা নেই।
-তা তো বুঝতেই পারছি। তাহলে আমার রেডি হয়ে বের হচ্ছি।
-একটু তাড়াতাড়ি করবেন আপনাদের আটা-ময়দা মাখতে যে সময় লাগে। ফুয়াদ বলল।
রিমি মুখটা বাকিয়ে চলে গেল। আমি তৎক্ষনাত অর্ণবের মুখে একটা চড় বসিয়ে বললাম- ওই ওকে ভাবি বললি কেন?
-আহা দোস্ত রাগ করিস কেন। তুই ওকে যখন বিয়ে করবি তখন তো উনি আমাদের ভাবি হবে।
-হারামজাদা, এখনো প্রপোজ করতে পারলাম না। আর তারপর যদি রিজেক্ট করে কিনা তার ঠিক নেই। উনি ভাবি বানিয়ে ফেলেছে।
-আহা দোস্ত তুই কেন টেনশন করিস কেন মেয়েরা রিজেক্ট তো করে আমাকে। তুই টেনশন করিস না দেখবি ইনশাআল্লাহ এই আমাদের ভাবি হবে।
-সেটা যখন হয় তখন ভাবি বলিস।
আমরা গাড়িতে উঠে বসে আছি। কিন্তু রিমিরা এখনো কেউ আসেনি। অর্ণব বললো, এই মেয়েদের যে কেন তুই সাথে নিচ্ছিস সবখানে দেরী করে এরা। আমি বললাম, তোর ভাবি একা একা যাবে নাকি। এরই মধ্যে চলে এসেছে রিমি, নীতু আর যোথি। গাড়ি স্টার্ট দিয়ে রওনা হলাম।
বেলা ১১টা নাগাদ পোছে গেলাম নীলাচল। যে যার যার মত ঘুরছে। অর্ণব নীতুর সাথে ঘুরার চেষ্টা করছে কথা বলার চেষ্টা করছে কিন্তু বেচারা কোন পাত্তাই পাচ্ছে না। দেখলাম রিমি দাড়িয়ে আছে। আমি গিয়ে বললাম, কি দেখছেন? রিমি বলল,......
-এই সুন্দর পাহাড় দেখছি। আসলে বাংলাদেশটা যে এত সুন্দর তা এই বান্দরবান না আসলে জানতাম না। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ আমাদেরকে আপনাদের সাথে আনার জন্য।
-That's my pleasure. আচ্ছা আমরা কি আপনি থেকে তুমি তে নামতে পারি।
-মানুষতো উপরে উঠতে চায়। তুমি কেন নিচে নামতে চায়। তুমিও উপরে উঠতে পারো।
রিমি বিভিন্ন পাহাড় দেখছে আমি শুধু রিমিকে দেখছি আর ভাবছি আরো আগে কেন তুমি আমার জীবনে এলে না। সেদিন সারাদিন আমরা ঘুরেছি,খেয়েছি একসাথে। রাত্রে কটেজে ফিরে আসি। তখন সন্ধা ৭টা। ভাবলাম আজ আমি আমার মনের কথা রিমিকে বলব তাই একটা চিঠিও লিখে ফেললাম। তারপর অর্ণবকে বললাম......
-যাতো এই চিঠিটা ওদের কটেজে গিয়ে রিমিকে দিয়ে আয়।
-ঠিক আছে দোস্ত। সাথে আমার নীতুর সাথেও দেখা হয়ে যাবে। বলল অর্ণব।
কিছুক্ষন পর দেখলাম অর্ণব ফিরে এল তবে একটু কুজো হয়ে আর সারা শরীরে কাটা বিধে রয়েছে। তারপর আমি জিজ্ঞাসা করলাম- কি হয়েছে এমন করছিস কেন?
ও বলল- লাথি খেয়ে।
-কোথায়? কিভাবে? কে মারল তোকে লাথি? ওটা তো আমরা মারি।
তারপর ও বলল......
-তুই চিঠিটা দেওয়ার পর আমি ওদের কটেজের সামনে যাই। গিয়ে দেখি কয়েকজন সেনাবাহিনী যার কারনে ভেতরে ঢুকতে পারছিলাম না। কেননা ওটা মেয়েজের কটেজ। তারপর ভাবলাম তোর চিঠিটা প্লেন বানিয়ে ভেতরে পাঠিয়ে দেই। কিন্তু প্লেনটা ভেতরে গিয়ে ল্যান্ড করে অন্য একটা মেয়ের কাছে। যেটা আমি জানতাম না। ওই মেয়েটা বাইরে এসে একজন সেনাবাহিনীকে সব বলে দেয়। তারপর সেই সেনাবাহিনী অফিসার আমাকে বলে......
-এখানে এসে মেয়েদের বিরক্ত করা হে(রাগান্বিত স্বরে বলে)।
-আহা আঙ্কেল আমি তো প্লেন চালাচ্ছিলাম। ছোটবেলা থেকেই চালাই।
-প্লেন চালাচ্ছিলি তাহলে এটা কি? কি লেখ এই কাগজে।
- কি লেখা আমি কি করে জানব ওটা তো আমার বন্ধু লিখেছে না। (এইরে সেরেছে মুখফসকে সত্যি কথাটা বলে ফেললাম।)। মানে আমি কিছু জানিনা ওটা কার প্লেন। আচ্ছা আপনি বলুন এই বয়সে আমার মত একটা ছেলে প্লেন চালায়। এখন তো মেয়েদের পেছনে ছোটার সময় প্লেন চালানোর সময় না।
-তুই কিছু জানিস না তাই না। জানাচ্ছি তোকে। পেছন ফের।
-কেন আঙ্কেল আমার ফ্রন্ট সাইডটা কি আপনার ভালো লাগছে না। তাহলে দেখুন ব্যাক সাইড। যেই আমি পেছন ফিরেছি ওমনি আমার পশ্চাদদেশে সজোরে লাথি মারে ওমনি পড়ি গিয়ে কাটার মধ্যে। (কান্নার স্বরে বলল অর্ণব)। এগুলো শুনে আমি হাসি থামাতে পাড়লাম না। ও বলল বা তোমার জন্য আমার এই অবস্থা আর তুমি মজা নিচ্ছো বাহ। আমি বললাম, সরি। তারপর ওকে পেইন কিলার খায়িয়ে আমরা ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরদিন সকালে নাস্তা খাওয়া শেষ করে দেখি রিমিরা এসেছে। রিমি বলল......
-কাল দেরী হয়েছিল। আজ একেবারে আগেই এসেছি।
-কিন্তু আমরাতো রেডি হইনি এখনো।
-তাহলে তাড়াতাড়ি করেন। আজ সাঙ্কু নদী দেখতে যাব ভাবছি।
অর্ণব তখনো শুয়ে রয়েছে। তারপর.....
-আহ,উহ কারা এসেছেরে দোস্ত?
-রিমিরা। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে। সাঙ্কু নদী দেখতে যাব।
-এই অবস্থায় কি করে যাব?
-গেলে চল না হলে থাক।
-আরে না যাব তো আমি। না গেলে মেয়ে দেখা মিস হয়ে যাবে।
সবাই গাড়িতে উঠে রওনা হলাম। যেতে যেতে অর্ণব উপজাতি মেয়েদেরকে দেখে আর বলছে, সবাই আমাকে পাত্তা না দেয় উপজাতিদের মধ্যে কাওকে দেখি পটাতে পারি কিনা। ওই একটা উপজাতি মেয়ে দোস্ত দাড়া, গাড়ি থামা।
গাড়ি থামালাম, অর্ণব গাড়ি থেকে নামল। আমরাও নামলাম। কিছুদুর অর্ণব হাটতে হাটতে ওই মেয়েটার সাথে যাওয়ার পর অর্ণব বলল, আমি তোমাকে ভালোবাসি। তারপর মেয়েটা আঞ্চলিক ভাষায় কি যেন একটা বলল। সঙ্গে সঙ্গে অনেক উপজাতি আসে অর্ণবকে ধরার চেষ্টা করে কিন্তু ও আগেই দৌড় দিয়েছিল। তাড়াতাড়ি আমি গাড়ি স্টার্ট দেই। সবাইকে গাড়িতে উঠতে বলি। অর্ণব দৌড়ে এসে গাড়ির জানালা দিয়ে অর্ধেক দেহ ঢুকিয়ে ফেলে গাড়ির ভেতর। এমন সময়ই ঘটল এক ঘটনা অর্ণবের পেছন দিকে একটা তীর এসে লাগে। অর্ণবের চোখ দুটো বড় বড় হয়ে যায়। তারপর জোরে এক চিৎকার দেয় অর্ণব। তখনো গাড়ি চলছে কেননা আর কিছুক্ষন ওখানে থাকলে হয়তো আমার ওর মত অবস্থা হত। কিছুদুর যাবার পর ওকে ডাক্তার দেখিয়ে আবার আমরা গাড়িতে আমরা সবাই।
এবার অর্ণব বলল....
-দোস্ত সবাই কেন আমার পেছনে আ্যটাক করে।
এই কথা শুনে রিমি ও ওর বান্ধবীরা হাসতে থাকে। রিমি বলল....
-কেন? এর আগে আবার কবে আপনার সাথে এটা ঘটল?
-আপনাদের জন্যই তো সব হয়েছে।
আমি অর্ণবকে চোখ ইশারা দেয়ায় ও থেমে গেল। তারপর বলল...
-মানে আপনারা গাড়ির গেটটা তাড়াতাড়ি বন্ধ না করলে এমন হতো না।
এবার আমরা সাঙ্কু নদীতে চলে এসেছি....সবাই যে যার মত করে ঘুরছে শুধুমাত্র ফুয়াদ বসে কি যেন খাচ্ছে আর বেচারা অর্ণব দাড়িয়ে আছে। কেননা ও বসতেও পারবে না।
রিমি পানিতে হাত দিয়ে বলল, কি সুন্দর পানি। উহ যদি এখানে আমার বাড়ি হত! আমি বললাম,
-তাহলে বাড়ি করে নাও। একা থাকবে।
-একা কেন থাকবো। অবশ্যই কেউ থাকবে।
-কে তোমার ভালোবাসার মানুষ? তার নামটা কি জানতে পারি।
-এখনো তো পেলাম না মনের মানুষ পেলে তোমাকে জানাবো।
তারপর আমি নদীর দিকটায় হাত বাড়িয়ে বললাম,
"প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে মনে হল তাই
আমার এ জীবন আমি তোমায় সপে দিতে চাই,
ভালোবাসি তাই, ভালোবাসতে চাই"
রিমি হাসতে হাসতে বলল, হঠাৎ কবি হয়ে গেলে।
সন্ধা হয়ে এল সবাই ফিরে এলাম রিসোর্টে। তারপর দিন সবাই ঢাকায় চলে আসব তাই ব্যাগ গুছুয়ে রাখলাম।
সকালে রওনা হলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। তারপর চট্টগ্রাম এসে একটা রেস্টুরেন্টে খেতে বসলাম আমি আর রিমি একটা টেবিলে। তারপর আমি রিমিকে বললাম, রিমি আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাই।
-রিমি বলল, বল।
-I think I am in love with you.
তখন রিমি কিছু না বলে টেবিল থেকে উঠে গেল। আমি ভাবলাম কিছু ভুল করে ফেললাম না তো। রিমি ড্রাইভিং সিটের পাশে বসে আছে। এটা দেখে অর্ণব বলল, আপনি এখানে কেন?
-তাতে আপনার কি। আপনি ফুয়াদের কাছে গিয়ে বসুন।
আমি ভয়ে ভয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলাম। গাড়ি চলছে.... ঢাকায় পোছে সবাইকে নামিয়ে দিয়ে রিমিকে ওর বাসায় পোছে দিতে যাচ্ছি। এমন সময় আমার বাম হাতে রিমি স্পর্শ পাই দেখি ও আমার হাতটা শক্ত করে ধরেছে। তৎক্ষনাত আমি রিমির দিকে তাকাই। এবার রিমি বলল, বান্দরবান তাহলে বাড়ি করাই যায় তোমার আমার থাকার জন্য। I Love You Too Mr.Nahid.
শীতের দিন তাই আমরা সবাই শীতের পোশাক পরা। আমি সামনে বসে গাড়ি ড্রাইভ করছি। আর আমার পাশে অর্ণব আর পেছনে ফুয়াদ। একটা কথা বলে রাখি আমার বন্ধু ফুয়াদ একটু বোকা ধরনের আর অর্ণব ধুর্ত হলেও ওর দুর্বল জায়গা মেয়েরা। মেয়ে দেখলেই ........ যাইহোক আর কিছুক্ষনের মধ্যে সকাল হয়ে যাবে।
অর্ণব বলল......
-দোস্ত এটা টুরিস্ট সিজন। তাই নিশ্চয়ই মেয়েরা ঘুরতে আসবে আর তার মধ্যে থেকে যদি কোনটাকে গার্ল-ফ্রেন্ড বানিয়ে ফেলতে পারি.....তাহলে তো কোন কথাই নেই।
-আচ্ছা তুই মেয়ে ছাড়া কিছু বুঝিস না নাকি? তুই কি ভুলে গেলি পেছনের কথা। একটা মেয়ে তোর কি হাল করে ছেড়েছিল। তোর টাকা-পয়সা, জামা-প্যান্ট সব নিয়ে তোকে একটা আন্ডার প্যান্ট পড়িয়ে রেখে দিয়েছিল।
-দোস্ত Past is past. সেই কথা আমি আর মনে করতে চাই না।
ফুয়াদ তখনো ঘুমিয়ে রয়েছে গাড়িতে কিছুক্ষন পর ঘুম থেকে উঠে ফুয়াদ বললো.....
-Good morning দোস্ত।
-এই তুই কি ঘুমানোর জন্য বান্দরবান যাচ্ছিস। সারাক্ষন শুধু ঘুমাস। আরে ব্যাটা আমরা মজা করতে যাচ্ছি ঘুমানোর জন্য নয়। অর্ণব বললো।
-দোস্ত টায়ার্ড ছিলাম তো তাই। আর ঘুমাবো না।
এরই মধ্যে আমরা ঢাকা থেকে চোদ্দগ্রাম চলে এসেছি। ফুয়াদ বললো....
-দোস্ত খুব ক্ষুদা লাগছে তো।
আমাদেরও ক্ষুদা লাগছে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম। তারপর খাবার অর্ডার দিলাম। এরই দেখতে পেলাম অন্য টেবিলে তিনজন মেয়ে বসে খাচ্ছে। অর্ণবের চোখ সেদিকে.....তারপর আমি বললাম.....
-এই ঐ দিকে তাকিয়ে আছিস কেন?
-দোস্ত পরীদের দেখেছিস কখনো এরা পরী। লাল, নীল, হলুদ পরী। দেখ ঐ হলুদ রংয়ের ড্রেস পরা মেয়াটা কত সুন্দর। আমি ওর বাপের জামাই হতে চাই। (বিষ্ময়ের সুরে বলল অর্ণব)
অর্নব ওদিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে খাবার মুখে না দিয়ে ওর শার্টে ভরাচ্ছে।
-ওদিকে না তাকিয়ে ঠিকমতো খাবার খা। দেখ ফুয়াদ কান্ডে-পিন্ডে গিলছে। যেন কত বছর ধরে খাবার খায় না।
-দোস্ত খুব ক্ষুদা লাগছে তো তাই। ফুয়াদ বললো।
এরই মধ্যে নীল ড্রেই পরা মেয়েটা এসে বলল.....
-আপনাদের সমস্যা কি? তখন থেকে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছেন।
এবার অর্ণব বললো.......
-কৈ আমি তো ঐ হলুদ রংয়ের ড্রেস পরা যিনি তার দিকে তাকিয়ে আছি। আপনি বলেন না ওর নামটা কি?
-থাপ্পর দিয়া ৩২টা দাঁত ফালায়ে দিবো। আবার নাম জিজ্ঞাসা করেন। এই চলতো আমরা এখান থেকে চলে যাই। ইডিয়েট কোথাকার।
-দোস্ত আমাদের ইডিয়েট বলে চলে গেল। তুই কিছু বল।
তবে এতক্ষনে তো আমার একে ভালোলেগে গেছে। আমরাও বিল মিটিয়ে রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে পড়লাম।
Image by Quangpraha on Pixabay |
আমি যেই গাড়ি স্টার্ট দিবো এমন সময় নীল রংয়ের ড্রেই পরা মেয়েটা আমায় এসে বলল.....
-আপনারা কোথায় যাবেন?
-বান্দরবান।
-আমরাও বান্দরবান যেতে চেয়েছি কিন্তু কি জানেন আমাদের গাড়িটা হঠাৎ খারাপ হয়ে গেছে। আমাদের একটু বান্দরবান পর্যন্ত লিভ দেননা।
-এখন কেনো একটু আগে তো ইডিয়েট বললেন। অর্ণব বললো।
-আমি বললাম, আপনারা উঠুন।
-মেয়েটি বলল, Thanks. ড্রাইভার তুমি গাড়ি সারিয়ে ঢাকায় নিয়ে যেও। আমরা বান্দরবান যাচ্ছি।
সবাই গাড়িতে উঠল। নীল ড্রেই পরা যিনি ও তার বান্ধবীরা বসলেন মাঝখানের সিটেগুলোতে। আর সবার পেছনে ফুয়াদ আর আমার পাশে অর্ণব বসে আছে।
গাড়ি চলছে............
-আমি বললাম, আপনার নামটা?
-রিমি। আর ও নীতু, এবং ও যোথি।
-রিমি বলল, আপনার নামটা?
-নাহিদ। নাহিদ আহম্মেদ। আর তৎক্ষনাত অর্ণব নিজের নামটা নিজেই বলল জিজ্ঞাসা না করা সত্যেও। তারপর আমি বললাম আপনাদের পেছনে যে ঘুমাচ্ছে ওর নাম ফুয়াদ।
-ও।
অর্ণব শুধু লুকিং গ্লাসে পেছনের হলুদ রংয়ের ড্রেস পরা অর্থ্যাৎ নীতুর দিকে বারে বারে তাকাচ্ছে।
দুপুর দুইটায় আমরা চট্টগ্রাম এসে পোছলাম। সবাই মিলে খাবার খেতে একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম। অর্ণব দেখি নীতুর সাথে কথা বলার পুরোদমে চেষ্টা করছে কিন্তু নীতু কোন পাত্তা দিচ্ছে না ওকে। আমরা সবাই এক একটা টেবিলে খাচ্ছি। সেই আগের মত অর্ণব নীতুর দিকে তাকিয়ে আছে। নীতুও ওর দিক থেকে মুখটা ফিরিয়ে অন্য দিকে বসে খাওয়া শুরু করে।
এবার আবার সবাই গাড়িতে চেপে যাচ্ছি। গন্তব্যস্থান বান্দবানের নীলগিরি হিল রিসোর্ট। যেতে রাত ৯টার দিকে আমরা গিয়ে পোছালাম সেখানে। তারপর কটেজ বুক করলাম। আমাদের কটেজের থেকে রিমিদের কটেজ খানিকটা দূরে। রাতে আমি, অর্ণব আর ফুয়াদ ডিনার করে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ি টায়ার্ড ছিলাম বলে।
আমরা আমাদের কটেজে সকালের নাস্তা করছি এমন সময় দেখি রিমি আমাদের কটেজের দিকে আসছে। রিমি এসে বলল.....
-আজ আপনারা কি কোন জায়গা দেখতে যাবেন?
-আমি বললাম, হ্যাঁ ভাবছি নীলাচল যাবো। আপনারাও চাইলে আমাদের সাথে যেতে পারেন।
-তাহলে তো কোন সমস্যাই নেই।
-ভাবি সরি আপনাকে ভাবি বলে ফেললাম আসলে আমরা থাকতে আপনাদের কোন সমস্যা নেই।
-তা তো বুঝতেই পারছি। তাহলে আমার রেডি হয়ে বের হচ্ছি।
-একটু তাড়াতাড়ি করবেন আপনাদের আটা-ময়দা মাখতে যে সময় লাগে। ফুয়াদ বলল।
রিমি মুখটা বাকিয়ে চলে গেল। আমি তৎক্ষনাত অর্ণবের মুখে একটা চড় বসিয়ে বললাম- ওই ওকে ভাবি বললি কেন?
-আহা দোস্ত রাগ করিস কেন। তুই ওকে যখন বিয়ে করবি তখন তো উনি আমাদের ভাবি হবে।
-হারামজাদা, এখনো প্রপোজ করতে পারলাম না। আর তারপর যদি রিজেক্ট করে কিনা তার ঠিক নেই। উনি ভাবি বানিয়ে ফেলেছে।
-আহা দোস্ত তুই কেন টেনশন করিস কেন মেয়েরা রিজেক্ট তো করে আমাকে। তুই টেনশন করিস না দেখবি ইনশাআল্লাহ এই আমাদের ভাবি হবে।
-সেটা যখন হয় তখন ভাবি বলিস।
আমরা গাড়িতে উঠে বসে আছি। কিন্তু রিমিরা এখনো কেউ আসেনি। অর্ণব বললো, এই মেয়েদের যে কেন তুই সাথে নিচ্ছিস সবখানে দেরী করে এরা। আমি বললাম, তোর ভাবি একা একা যাবে নাকি। এরই মধ্যে চলে এসেছে রিমি, নীতু আর যোথি। গাড়ি স্টার্ট দিয়ে রওনা হলাম।
বেলা ১১টা নাগাদ পোছে গেলাম নীলাচল। যে যার যার মত ঘুরছে। অর্ণব নীতুর সাথে ঘুরার চেষ্টা করছে কথা বলার চেষ্টা করছে কিন্তু বেচারা কোন পাত্তাই পাচ্ছে না। দেখলাম রিমি দাড়িয়ে আছে। আমি গিয়ে বললাম, কি দেখছেন? রিমি বলল,......
-এই সুন্দর পাহাড় দেখছি। আসলে বাংলাদেশটা যে এত সুন্দর তা এই বান্দরবান না আসলে জানতাম না। আপনাদের অনেক ধন্যবাদ আমাদেরকে আপনাদের সাথে আনার জন্য।
-That's my pleasure. আচ্ছা আমরা কি আপনি থেকে তুমি তে নামতে পারি।
-মানুষতো উপরে উঠতে চায়। তুমি কেন নিচে নামতে চায়। তুমিও উপরে উঠতে পারো।
রিমি বিভিন্ন পাহাড় দেখছে আমি শুধু রিমিকে দেখছি আর ভাবছি আরো আগে কেন তুমি আমার জীবনে এলে না। সেদিন সারাদিন আমরা ঘুরেছি,খেয়েছি একসাথে। রাত্রে কটেজে ফিরে আসি। তখন সন্ধা ৭টা। ভাবলাম আজ আমি আমার মনের কথা রিমিকে বলব তাই একটা চিঠিও লিখে ফেললাম। তারপর অর্ণবকে বললাম......
-যাতো এই চিঠিটা ওদের কটেজে গিয়ে রিমিকে দিয়ে আয়।
-ঠিক আছে দোস্ত। সাথে আমার নীতুর সাথেও দেখা হয়ে যাবে। বলল অর্ণব।
কিছুক্ষন পর দেখলাম অর্ণব ফিরে এল তবে একটু কুজো হয়ে আর সারা শরীরে কাটা বিধে রয়েছে। তারপর আমি জিজ্ঞাসা করলাম- কি হয়েছে এমন করছিস কেন?
ও বলল- লাথি খেয়ে।
-কোথায়? কিভাবে? কে মারল তোকে লাথি? ওটা তো আমরা মারি।
তারপর ও বলল......
-তুই চিঠিটা দেওয়ার পর আমি ওদের কটেজের সামনে যাই। গিয়ে দেখি কয়েকজন সেনাবাহিনী যার কারনে ভেতরে ঢুকতে পারছিলাম না। কেননা ওটা মেয়েজের কটেজ। তারপর ভাবলাম তোর চিঠিটা প্লেন বানিয়ে ভেতরে পাঠিয়ে দেই। কিন্তু প্লেনটা ভেতরে গিয়ে ল্যান্ড করে অন্য একটা মেয়ের কাছে। যেটা আমি জানতাম না। ওই মেয়েটা বাইরে এসে একজন সেনাবাহিনীকে সব বলে দেয়। তারপর সেই সেনাবাহিনী অফিসার আমাকে বলে......
-এখানে এসে মেয়েদের বিরক্ত করা হে(রাগান্বিত স্বরে বলে)।
-আহা আঙ্কেল আমি তো প্লেন চালাচ্ছিলাম। ছোটবেলা থেকেই চালাই।
-প্লেন চালাচ্ছিলি তাহলে এটা কি? কি লেখ এই কাগজে।
- কি লেখা আমি কি করে জানব ওটা তো আমার বন্ধু লিখেছে না। (এইরে সেরেছে মুখফসকে সত্যি কথাটা বলে ফেললাম।)। মানে আমি কিছু জানিনা ওটা কার প্লেন। আচ্ছা আপনি বলুন এই বয়সে আমার মত একটা ছেলে প্লেন চালায়। এখন তো মেয়েদের পেছনে ছোটার সময় প্লেন চালানোর সময় না।
-তুই কিছু জানিস না তাই না। জানাচ্ছি তোকে। পেছন ফের।
-কেন আঙ্কেল আমার ফ্রন্ট সাইডটা কি আপনার ভালো লাগছে না। তাহলে দেখুন ব্যাক সাইড। যেই আমি পেছন ফিরেছি ওমনি আমার পশ্চাদদেশে সজোরে লাথি মারে ওমনি পড়ি গিয়ে কাটার মধ্যে। (কান্নার স্বরে বলল অর্ণব)। এগুলো শুনে আমি হাসি থামাতে পাড়লাম না। ও বলল বা তোমার জন্য আমার এই অবস্থা আর তুমি মজা নিচ্ছো বাহ। আমি বললাম, সরি। তারপর ওকে পেইন কিলার খায়িয়ে আমরা ঘুমিয়ে পড়লাম।
পরদিন সকালে নাস্তা খাওয়া শেষ করে দেখি রিমিরা এসেছে। রিমি বলল......
-কাল দেরী হয়েছিল। আজ একেবারে আগেই এসেছি।
-কিন্তু আমরাতো রেডি হইনি এখনো।
-তাহলে তাড়াতাড়ি করেন। আজ সাঙ্কু নদী দেখতে যাব ভাবছি।
অর্ণব তখনো শুয়ে রয়েছে। তারপর.....
-আহ,উহ কারা এসেছেরে দোস্ত?
-রিমিরা। তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে। সাঙ্কু নদী দেখতে যাব।
-এই অবস্থায় কি করে যাব?
-গেলে চল না হলে থাক।
-আরে না যাব তো আমি। না গেলে মেয়ে দেখা মিস হয়ে যাবে।
সবাই গাড়িতে উঠে রওনা হলাম। যেতে যেতে অর্ণব উপজাতি মেয়েদেরকে দেখে আর বলছে, সবাই আমাকে পাত্তা না দেয় উপজাতিদের মধ্যে কাওকে দেখি পটাতে পারি কিনা। ওই একটা উপজাতি মেয়ে দোস্ত দাড়া, গাড়ি থামা।
গাড়ি থামালাম, অর্ণব গাড়ি থেকে নামল। আমরাও নামলাম। কিছুদুর অর্ণব হাটতে হাটতে ওই মেয়েটার সাথে যাওয়ার পর অর্ণব বলল, আমি তোমাকে ভালোবাসি। তারপর মেয়েটা আঞ্চলিক ভাষায় কি যেন একটা বলল। সঙ্গে সঙ্গে অনেক উপজাতি আসে অর্ণবকে ধরার চেষ্টা করে কিন্তু ও আগেই দৌড় দিয়েছিল। তাড়াতাড়ি আমি গাড়ি স্টার্ট দেই। সবাইকে গাড়িতে উঠতে বলি। অর্ণব দৌড়ে এসে গাড়ির জানালা দিয়ে অর্ধেক দেহ ঢুকিয়ে ফেলে গাড়ির ভেতর। এমন সময়ই ঘটল এক ঘটনা অর্ণবের পেছন দিকে একটা তীর এসে লাগে। অর্ণবের চোখ দুটো বড় বড় হয়ে যায়। তারপর জোরে এক চিৎকার দেয় অর্ণব। তখনো গাড়ি চলছে কেননা আর কিছুক্ষন ওখানে থাকলে হয়তো আমার ওর মত অবস্থা হত। কিছুদুর যাবার পর ওকে ডাক্তার দেখিয়ে আবার আমরা গাড়িতে আমরা সবাই।
এবার অর্ণব বলল....
-দোস্ত সবাই কেন আমার পেছনে আ্যটাক করে।
এই কথা শুনে রিমি ও ওর বান্ধবীরা হাসতে থাকে। রিমি বলল....
-কেন? এর আগে আবার কবে আপনার সাথে এটা ঘটল?
-আপনাদের জন্যই তো সব হয়েছে।
আমি অর্ণবকে চোখ ইশারা দেয়ায় ও থেমে গেল। তারপর বলল...
-মানে আপনারা গাড়ির গেটটা তাড়াতাড়ি বন্ধ না করলে এমন হতো না।
এবার আমরা সাঙ্কু নদীতে চলে এসেছি....সবাই যে যার মত করে ঘুরছে শুধুমাত্র ফুয়াদ বসে কি যেন খাচ্ছে আর বেচারা অর্ণব দাড়িয়ে আছে। কেননা ও বসতেও পারবে না।
রিমি পানিতে হাত দিয়ে বলল, কি সুন্দর পানি। উহ যদি এখানে আমার বাড়ি হত! আমি বললাম,
-তাহলে বাড়ি করে নাও। একা থাকবে।
-একা কেন থাকবো। অবশ্যই কেউ থাকবে।
-কে তোমার ভালোবাসার মানুষ? তার নামটা কি জানতে পারি।
-এখনো তো পেলাম না মনের মানুষ পেলে তোমাকে জানাবো।
তারপর আমি নদীর দিকটায় হাত বাড়িয়ে বললাম,
"প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখে মনে হল তাই
আমার এ জীবন আমি তোমায় সপে দিতে চাই,
ভালোবাসি তাই, ভালোবাসতে চাই"
রিমি হাসতে হাসতে বলল, হঠাৎ কবি হয়ে গেলে।
সন্ধা হয়ে এল সবাই ফিরে এলাম রিসোর্টে। তারপর দিন সবাই ঢাকায় চলে আসব তাই ব্যাগ গুছুয়ে রাখলাম।
সকালে রওনা হলাম ঢাকার উদ্দেশ্যে। তারপর চট্টগ্রাম এসে একটা রেস্টুরেন্টে খেতে বসলাম আমি আর রিমি একটা টেবিলে। তারপর আমি রিমিকে বললাম, রিমি আমি তোমাকে একটা কথা বলতে চাই।
-রিমি বলল, বল।
-I think I am in love with you.
তখন রিমি কিছু না বলে টেবিল থেকে উঠে গেল। আমি ভাবলাম কিছু ভুল করে ফেললাম না তো। রিমি ড্রাইভিং সিটের পাশে বসে আছে। এটা দেখে অর্ণব বলল, আপনি এখানে কেন?
-তাতে আপনার কি। আপনি ফুয়াদের কাছে গিয়ে বসুন।
আমি ভয়ে ভয়ে গাড়ি স্টার্ট দিলাম। গাড়ি চলছে.... ঢাকায় পোছে সবাইকে নামিয়ে দিয়ে রিমিকে ওর বাসায় পোছে দিতে যাচ্ছি। এমন সময় আমার বাম হাতে রিমি স্পর্শ পাই দেখি ও আমার হাতটা শক্ত করে ধরেছে। তৎক্ষনাত আমি রিমির দিকে তাকাই। এবার রিমি বলল, বান্দরবান তাহলে বাড়ি করাই যায় তোমার আমার থাকার জন্য। I Love You Too Mr.Nahid.
The End.
©Copyright 2017 StorylandBD
বান্দরবান বাড়ি করতেই হবে রিমির জন্য। অসাধারণ একটি গল্প।
ReplyDeleteনীলের গল্প চাই আরো।
ReplyDeleteThank you everybody to stay with us. You are our inspiration to writing a story now we are happy to see that you love our story. Thank you
ReplyDeleteগল্পটা সুন্দর হয়েছে। "প্রকৃতির এ সৌন্দর্য দেখে মনে হল তাই,আমার এ জীবন আমি তোমায় সপে দিতে চাই, ভালোবাসি তাই, ভালবাসতে চাই। Nice poetry.
ReplyDeleteWonderful strory love story. This website's love story is best and I love it
ReplyDeleteআমি গল্প পাঠাতে চাই। কিভাবে পাঠাবো?
ReplyDeleteWe are very happy to see that you want to share your writings with us. You have to send your story by mail. Our mailing address is: storylandbd@gmail.com or contact@storylandbd.com
Delete