রাস্তাঘাট নির্জন, জনশূন্য। হেটে হেটে বাড়ি ফিরছে তিনজন। ওদের এই এলাকাটা একটু নির্জন ধরনের। তেমন বেশী লোকজন থাকে না। দূরে দূরে কয়েকটা বাড়ি। তেমন কোনো দোকানপাটও নেই। এদিকে যারা থাকেন সবারই গাড়ি আছে তাই কোনো ট্যাক্সি বা রিক্সাও চলে না। তবে খুব বেশীদিন বোধ হয় এমন নিরিবিলি থাকবে না জায়গাটা। ইদানিং প্রমোটারেরা যেমন আনাগোনা শুরু করেছে তাতে খুব শীঘ্রই এই এলাকাও দূষিত হতে চলেছে।
এসব বিষয় নিয়েই কথা বলতে বলতে আসছে পার্বন, প্রদীপ আর টাইগার। ওর আসল নাম তন্ময়। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই টাইগার নামে ডাকতে ডাকতে ওর মা ওর ডাকনাম টাইগারই রেখে দিয়েছেন। তিনজনই মাধ্যমিক স্কুলের ছাত্র। প্রদীপ আর টাইগার লম্বায় সমান। পার্বন ওদের থেকে একটু লম্বা। পার্বন অত্যন্ত মেধাবী, বিচক্ষন, ধীর আর তীক্ষবুদ্ধিসম্পন্ন। প্রদীপ এককথায় হাসি-খুশি ভাল ছেলে। টাইগার একটু চঞ্চল ধরনের। আজ স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আর স্কুলও বন্ধ হয়েছে। তাই তিনজনেই খুব খুশি। -সত্যি পার্বন, হেটে ফিরতেই বেশ লাগছে। তুই সাইকেল আনতে নিষেধ করে ভলই করেছিস, ওর দিকে চেয়ে বলল প্রদীপ।
আচ্ছা এ বারের ছুটিতে প্লান কি, জিজ্ঞেস করল টাইগার।
দুজনের দিকে চেয়ে পার্বন বলল, এত তাড়াতাড়ি কি প্লান করব। চল বাসায় গিয়ে ঠিক করি।
আচ্ছা এ বারের ছুটিতে প্লান কি, জিজ্ঞেস করল টাইগার।
দুজনের দিকে চেয়ে পার্বন বলল, এত তাড়াতাড়ি কি প্লান করব। চল বাসায় গিয়ে ঠিক করি।
এমন সময় শুরু হল বৃষ্টি। তিনজন দৌড়ে গিয়ে সামনের একটা পরিত্যক্ত বাড়ির বারান্দায় দাড়ালো। সামনেই একটা বিল্ডিং এর কাজ চলছে। আজ অবশ্য সেখানে কেউ নেই।
শীতের দিনে একি বৃষ্টি শুরু হল,গজগজ করতে করতে বলল টাইগার।
-মৌসূমি জলবায়ুর প্রভাবেই এমনটা হয়। অনেকসময়...
-ভাই পরীক্ষা শেষ। এখন কেন এসব বলা শুরু করলি, পার্বনকে বলল প্রদীপ।
-এজন্যই তো পার্বন ফার্স্টবয়। আর আমরা দুজন সেকেন্ড,থার্ড, পার্বনের দিকে শ্রদ্ধার চোখে তাকিয়ে বলল টাইগার।
তিনজন বারান্দার রেলিং ধরে দাড়িয়ে বৃষ্টি দেখতে থাকে। পানির ছাঁট এসে লাগছে গায়ে। এমনিই শীতকাল। তার উপর দমকা বাতাসে কাপতে থাকে তিনজন। এমন সময় সামনের নির্মানাধীন বিল্ডিংটার গ্যারেজ থেকে একটা বাচ্চা দৌড়ে আসে। পিছনে চারজন লোক। সামনের জন ছেলেটার হাত মুচড়ে ধরে গালি দিয়ে ওঠে, শয়তানের বাচ্চা চালাকি করলে শেষ করে দেব।
শীতের দিনে একি বৃষ্টি শুরু হল,গজগজ করতে করতে বলল টাইগার।
-মৌসূমি জলবায়ুর প্রভাবেই এমনটা হয়। অনেকসময়...
-ভাই পরীক্ষা শেষ। এখন কেন এসব বলা শুরু করলি, পার্বনকে বলল প্রদীপ।
-এজন্যই তো পার্বন ফার্স্টবয়। আর আমরা দুজন সেকেন্ড,থার্ড, পার্বনের দিকে শ্রদ্ধার চোখে তাকিয়ে বলল টাইগার।
তিনজন বারান্দার রেলিং ধরে দাড়িয়ে বৃষ্টি দেখতে থাকে। পানির ছাঁট এসে লাগছে গায়ে। এমনিই শীতকাল। তার উপর দমকা বাতাসে কাপতে থাকে তিনজন। এমন সময় সামনের নির্মানাধীন বিল্ডিংটার গ্যারেজ থেকে একটা বাচ্চা দৌড়ে আসে। পিছনে চারজন লোক। সামনের জন ছেলেটার হাত মুচড়ে ধরে গালি দিয়ে ওঠে, শয়তানের বাচ্চা চালাকি করলে শেষ করে দেব।
টাইগার মার্শাল আর্ট শেখে। সামনের বছর 'ব্লাক বেল্ট' কম্পিটিশানে অংশ নেবে। টাইগার উত্তেজিত হয়ে ওঠে পার্বনের দিকে তাকায়। কারন বুদ্ধি বিবেচনায় তার জুড়ি নেই। তাই ওর সিন্ধান্ত মত কাজ করতে চায় টাইগার। পার্বন ইশারা দেয়। টাইগার এক লাফে রেলিং টপকে এসে রাস্তায় নামে। বাচ্চাটা ব্যাথায় চিৎকার করছে। মহূর্তের মধ্যে তার হাত ধরে থাকা লোকটা একটা ফ্লাইং কিক খেয়ে চিৎ হয়ে পড়ে। তার পেছনের দুজনও বেশ কিছু পাঞ্চ আর কারাটে চপ খেয়ে পড়ে যায়। আর চতুর্থ জনের দিকে এগোতেই সে দৌড়ে পালায়। বাকি তিনজন কোনমতে উঠে দৌড়ে পালায়। টাইগার এগিয়ে যায় ছেলেটার কাছে। পার্বন-প্রদীপও এগিয়ে আসছে। ভীষন ভয় পেয়েছে ছেলেটা। টাইগারের কোমর জড়িয়ে ধরে আছে শক্ত করে। চার কি সাড়ে চার বছর বয়স। কি করে যে এদের পাল্লায় পড়ল কে জানে। পার্বনের দিকে চাইল টাইগার।
-ওকে কি বাসায় নিয়ে যাব?
-আমার মনে হয় বাসার চেয়ে ওকে এ্যানি আন্টির চাইল্ড হোমে নিয়ে যাওয়া উচিত। সেখানে অন্যান্য বাচ্চার সাথে মিশে হয়তো ওর ভয় কমবে।
-ওকে কি বাসায় নিয়ে যাব?
-আমার মনে হয় বাসার চেয়ে ওকে এ্যানি আন্টির চাইল্ড হোমে নিয়ে যাওয়া উচিত। সেখানে অন্যান্য বাচ্চার সাথে মিশে হয়তো ওর ভয় কমবে।
এই এলাকাতেই রয়েছে মিসেস এ্যানি এ্যান্টোনি এর চাইল্ড হোম। অনেক বিষয় সম্পত্তির মালকিন এই মহিলা। ওনার স্বামি মারা গেছেন। কোন সন্তানও নেই। তাই ছোট অসহায় বাচ্চাদের আশ্রয় দেন। খুব যত্ন করেন এই বাচ্চাদের। তিনি খুব ভাল মানুষও। ওদের তিনজনকে খুব স্নেহ করেন। ওরাও তাকে বেশ পছন্দ করে।
গেট দিয়ে ঢুকল ওরা। বিশাল বড় কম্পাউন্ড। অসংখ্য ছেলে-মেয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে। এমন সময় দৌড়ে এল মিসেস এ্যান্টোনির কুকুর জন। ব্লাকহাউন্ড আর নেকড়ের সংকর বিশাল হিংস্র এক প্রানী। প্রদীপ জনের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করল। তারপর ওরা আন্টিকে খুজতে লাগল। পিছন পিছন এলো জন। এক জায়গায় ঘাসের মধ্যে বসে বাচ্চাদের গান শোনাচ্ছেন এ্যানি আন্টি।
গেট দিয়ে ঢুকল ওরা। বিশাল বড় কম্পাউন্ড। অসংখ্য ছেলে-মেয়ে দৌড়াদৌড়ি করছে। এমন সময় দৌড়ে এল মিসেস এ্যান্টোনির কুকুর জন। ব্লাকহাউন্ড আর নেকড়ের সংকর বিশাল হিংস্র এক প্রানী। প্রদীপ জনের মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করল। তারপর ওরা আন্টিকে খুজতে লাগল। পিছন পিছন এলো জন। এক জায়গায় ঘাসের মধ্যে বসে বাচ্চাদের গান শোনাচ্ছেন এ্যানি আন্টি।
"I am like a bird
I am going to fly away
I don't know where my soul is soul is
I don't know where my home is..."
গান শেষ হলে হাততালি দিল ওরা তিনজন। ওদের দেখে হাসি মুখে এগিয়ে আসছেন মহিলা। বয়স চল্লিশ পেরিয়েছে। হালকা পাতলা গঠন। বেশ লম্বা, চোখের মণি গাঢ় নীল, পিংঙ্গল রংয়ের লম্বা চুল। পার্বন এগিয়ে গেল।
-গুড আফ্টারনুন আন্টি।
-গুড আফ্টারনুন মাই বয়েজ। ওও হু ইজ দিজ লিটল কিউট?
পার্বন তাকে সবকিছু খুলে বলল।
ও মাই গড! আতঙ্কিত চোখে বলে উঠল আ্যন্টি এখুনি পুলিশে খবর দাও।
-আ্যন্টি দিজ ইজ নট ইয়োর ইংল্যান্ড। আমাদের সরকার তদন্ত খরচ বাচাতে খুবই একটিভ।
টাইগারের কথায় হেসে উঠল সবাই।
-আ্যন্টি আপাতত ওকে আপনার কাছে রেখে যাচ্ছি। যাতে ওর ভয়টা কমে।
-ওকে। ডোন্ট ওরি। আমি ওর খেয়াল রাখব।
-বাই আ্যন্টি।
-গুড বাই মাই বয়েজ। গড ব্লিস ইউ।
বাড়ির দিকে হাটা শুরু করল তিনজন। পার্বন গভীর ভাবে কিছু চিন্তা করছে। টাইগার ওর দিকে তাকিয়ে বলল, কি ভাবছিস?
-ভাবছি ছেলেটাকে ওর বাবা মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেব। ওর বাবা-মাকে কি করে খুজে বের করব।
ওই বাচ্চাটাই বলবে, নির্লিপ্ত ভাবে উত্তর দিল প্রদীপ।
-গাধা কোথাকার। তোর মনে হয় এতটুকু ছেলে ওর পুরো এ্যাড্রেস মুখস্ত করে ঘুরে বেরাচ্ছে।
-কিছু তো জানতে পারব।
-তা পারব কিন্তু তাতে বোধ হয় বিশেষ লাভ হবে না, লিফটে 5th বাটনে চাপ দিয়ে বলল পার্বন।
দরজার গায়ে লাগানো স্ক্রিনে বুড়ো আঙ্গুল রাখল টাইগার। দরজা খুলে গেল। মা বোধ হয় এখনো বাড়ি ফেরেনি। ওর মা পুলিশ অফিসার আর বাবা একজন বিখ্যাত লেখক। ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল। ড্রয়িং রুমে সোফায় বসে টিভি দেখছে ওর বোন তিশা। মেডিকেলের স্টুডেন্ট। ওর দিকে তাকাল।
-পরীক্ষা কেমন হয়েছে?
-খুব ভাল। মা ফেরেনি?
-না। হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে আয় তোর জন্য কেক বানিয়েছি।
-থ্যাংকস, আপু কিন্তু এখন না মা আসলে সবাই একসাথে খাব। বাবা কি বাসায়?
-হ্যা। কিন্তু ডিস্টার্ব করবি না একদম।
-গুড আফ্টারনুন আন্টি।
-গুড আফ্টারনুন মাই বয়েজ। ওও হু ইজ দিজ লিটল কিউট?
পার্বন তাকে সবকিছু খুলে বলল।
ও মাই গড! আতঙ্কিত চোখে বলে উঠল আ্যন্টি এখুনি পুলিশে খবর দাও।
-আ্যন্টি দিজ ইজ নট ইয়োর ইংল্যান্ড। আমাদের সরকার তদন্ত খরচ বাচাতে খুবই একটিভ।
টাইগারের কথায় হেসে উঠল সবাই।
-আ্যন্টি আপাতত ওকে আপনার কাছে রেখে যাচ্ছি। যাতে ওর ভয়টা কমে।
-ওকে। ডোন্ট ওরি। আমি ওর খেয়াল রাখব।
-বাই আ্যন্টি।
-গুড বাই মাই বয়েজ। গড ব্লিস ইউ।
বাড়ির দিকে হাটা শুরু করল তিনজন। পার্বন গভীর ভাবে কিছু চিন্তা করছে। টাইগার ওর দিকে তাকিয়ে বলল, কি ভাবছিস?
-ভাবছি ছেলেটাকে ওর বাবা মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেব। ওর বাবা-মাকে কি করে খুজে বের করব।
ওই বাচ্চাটাই বলবে, নির্লিপ্ত ভাবে উত্তর দিল প্রদীপ।
-গাধা কোথাকার। তোর মনে হয় এতটুকু ছেলে ওর পুরো এ্যাড্রেস মুখস্ত করে ঘুরে বেরাচ্ছে।
-কিছু তো জানতে পারব।
-তা পারব কিন্তু তাতে বোধ হয় বিশেষ লাভ হবে না, লিফটে 5th বাটনে চাপ দিয়ে বলল পার্বন।
দরজার গায়ে লাগানো স্ক্রিনে বুড়ো আঙ্গুল রাখল টাইগার। দরজা খুলে গেল। মা বোধ হয় এখনো বাড়ি ফেরেনি। ওর মা পুলিশ অফিসার আর বাবা একজন বিখ্যাত লেখক। ঘরে ঢুকে দরজা লাগিয়ে দিল। ড্রয়িং রুমে সোফায় বসে টিভি দেখছে ওর বোন তিশা। মেডিকেলের স্টুডেন্ট। ওর দিকে তাকাল।
-পরীক্ষা কেমন হয়েছে?
-খুব ভাল। মা ফেরেনি?
-না। হাতমুখ ধুয়ে ফ্রেশ হয়ে আয় তোর জন্য কেক বানিয়েছি।
-থ্যাংকস, আপু কিন্তু এখন না মা আসলে সবাই একসাথে খাব। বাবা কি বাসায়?
-হ্যা। কিন্তু ডিস্টার্ব করবি না একদম।
নিজের ঘরে এসে প্রথমেই বাথরুমে ঢুকল ও। টানা ৪০ মিনিট গোসল করে জামা-কাপড় বদলে পাল্টে বাইরে এসে দেখে মা এসে গেছে। সবাই খেতে বসল। বাবা চুপচাপ একটু গম্ভীর হয়ে আছে বোধ হয় লেখা নিয়ে কিছু ভাবছে। এমন সময় মায়ের ফোনে একটা মেসেজ আসল। সেটা দেখে মা চিন্তিত চোখে বলে উঠল, হচ্ছেটা কি? গত দু-মাসে এতগুলো বাচ্চা কিডন্যাপ। আবার একটা নতুন কেস। মায়ের কাছ থেকে ফোনটা নিয়ে ছবিটা দেখে চমকে উঠল ও। কারন ছবিটা সকালের বাচ্চা ছেলেটার। মা সেদিকে লক্ষ করে জিজ্ঞেস করল চমকে উঠলি যে! বাচ্চাটাকে কোথাও দেখেছিস নাকি?
-না মানে। চেনা চেনা লাগল। আসলে এই বয়সের প্রায় সব বাচ্চাকেই একই রকম দেখতে লাগে।
-আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে এ পর্যন্ত কিডন্যাপড সবগুলো বাচ্চাই একই বয়সী ৪ কি ৫ বছর।
চার কি পাঁচ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে স্পেশাল কি থাকে আপুর দিকে চেয়ে আপন মনে বলে ওঠে ও।
-এই বয়সটা খুবই স্পেশাল। কারন এই সময়ের মধ্যেই বাচ্চাদের মস্তিস্কের 90% গ্রোথ নিশ্চিত হয়। এ সময় বাচ্চাদের মধ্যে এনার্জি থাকে সবচেয়ে বেশী। এদের হাড় এবং শরীরের প্রতিটি জয়েন্ট বেশি ফ্লেক্সিবল থাকে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে এই সময়ে একটা বাচ্চাকে কোনো বিষয়ে যেমন ছবি আঁকা, গান গাওয়া, গণিত, বিজ্ঞান ইত্যাদি নিয়মিত চর্চা করালে ঐ বিষয়ে ট্যালেন্ট তৈরী হয়। ব্যাখ্যা করে বলল তিশা। বাবা একটা কথাও বলল না। নিজের ঘোরেই ডুবে আছে। খাওয়া শেষে আবার গিয়ে ঢুকল তার রাইটিং রুমে।
-না মানে। চেনা চেনা লাগল। আসলে এই বয়সের প্রায় সব বাচ্চাকেই একই রকম দেখতে লাগে।
-আশ্চর্য বিষয় হচ্ছে এ পর্যন্ত কিডন্যাপড সবগুলো বাচ্চাই একই বয়সী ৪ কি ৫ বছর।
চার কি পাঁচ বছরের বাচ্চাদের মধ্যে স্পেশাল কি থাকে আপুর দিকে চেয়ে আপন মনে বলে ওঠে ও।
-এই বয়সটা খুবই স্পেশাল। কারন এই সময়ের মধ্যেই বাচ্চাদের মস্তিস্কের 90% গ্রোথ নিশ্চিত হয়। এ সময় বাচ্চাদের মধ্যে এনার্জি থাকে সবচেয়ে বেশী। এদের হাড় এবং শরীরের প্রতিটি জয়েন্ট বেশি ফ্লেক্সিবল থাকে। সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হচ্ছে এই সময়ে একটা বাচ্চাকে কোনো বিষয়ে যেমন ছবি আঁকা, গান গাওয়া, গণিত, বিজ্ঞান ইত্যাদি নিয়মিত চর্চা করালে ঐ বিষয়ে ট্যালেন্ট তৈরী হয়। ব্যাখ্যা করে বলল তিশা। বাবা একটা কথাও বলল না। নিজের ঘোরেই ডুবে আছে। খাওয়া শেষে আবার গিয়ে ঢুকল তার রাইটিং রুমে।
ছাদে গেল টাইগার। পার্বন-প্রদীপ এসেছে। তিনজন একটা টেলিস্কোপ বানিয়েছে। আজই সেটা কম্পিলিট করবে। এটা দিয়ে যে কেবল দূরের জিনিস দেখা যাবে তা নয়। এটা দিয়ে ছবি তোলা বা ভিডিও রেকর্ড করা যাবে। আবার এটা সাউন্ড রেসপন্সারও। দূরে কোথাও মাইক্রোফোন রেখে এর সাহায্যে যেকোন শব্দ শোনা যাবে। এটা বানানোর আইডিয়া প্রদীপের। পুরোটার নকশা পার্বনের তৈরী। আর বেশীর ভাগ যন্ত্র জোগার করেছে টাইগার। তবে এটা বানাতে তিনজনেরই বিস্তর মেহনত করতে হয়েছে। কাজের ফাঁকে মা আর আপুর সব কথা পার্বনকে বলল টাইগার। পার্বনকে না জানিয়ে বাচ্চাটার ব্যাপারে মাকে কিছু বলতে চায় না ও।
-আমি মাকে এখনিই কিছু বলতে চাইছি না।
-আমার মনে হয় সেটাই আপাতত ঠিক হবে।
প্রদীপ বলল, কেন ওকে ওর বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া উচিৎ। নিশ্চয়ই তারা খুব কষ্টে আছে। আর বাচ্চাটার ও তো কষ্ট হচ্ছে বাবা-মাকে ছেড়ে থাকতে।
কিন্তু আমরা যদি কিডন্যাপারদের ধরার আগে বাচ্চাটার কথা পুলিশকে জানাই তাহলে পুলিশ এরপর আর তদন্ত করবে না। তখন আরো অনেক বাবা-মা আর বাচ্চার কষ্ট পাবে, বলল পার্বন। টাইগার কি ভাবছিস?
-চল বাচ্চাটাকে দেখে আসি।
-চল।
-আমি মাকে এখনিই কিছু বলতে চাইছি না।
-আমার মনে হয় সেটাই আপাতত ঠিক হবে।
প্রদীপ বলল, কেন ওকে ওর বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়া উচিৎ। নিশ্চয়ই তারা খুব কষ্টে আছে। আর বাচ্চাটার ও তো কষ্ট হচ্ছে বাবা-মাকে ছেড়ে থাকতে।
কিন্তু আমরা যদি কিডন্যাপারদের ধরার আগে বাচ্চাটার কথা পুলিশকে জানাই তাহলে পুলিশ এরপর আর তদন্ত করবে না। তখন আরো অনেক বাবা-মা আর বাচ্চার কষ্ট পাবে, বলল পার্বন। টাইগার কি ভাবছিস?
-চল বাচ্চাটাকে দেখে আসি।
-চল।
তিনজন জ্যাকেট পড়ে সাইকেল নিয়ে বের হল। তেমন রাত হয়নি কিন্তু কুয়াশার জন্য কিছু দেখা যায় না। বেশ কিছুক্ষনের মধ্যেই পোছে গেল ওরা। আ্যন্টির সাথে কথা বলছে পার্বন। কারন ও কথা গুছিয়ে বলতে পারে।
-আ্যন্টি বাচ্চাটা কেমন আছে?
-খুব ভাল। ওর ভয় কেটে গেছে। ঘুম পাড়িয়ে এলাম।
-ওর নাম বা বাসার কথা কিছু বলেছে?(যদিও ওরা সবাই জানে)
-হ্যাঁ ওর নাম অমি।
-ঠিক আছে আমরা আসি। ওর খেয়াল রাখবেন। আর একটু সতর্ক থাকবেন। কোন দরকার হলে ফোন করবেন।
-আ্যন্টি বাচ্চাটা কেমন আছে?
-খুব ভাল। ওর ভয় কেটে গেছে। ঘুম পাড়িয়ে এলাম।
-ওর নাম বা বাসার কথা কিছু বলেছে?(যদিও ওরা সবাই জানে)
-হ্যাঁ ওর নাম অমি।
-ঠিক আছে আমরা আসি। ওর খেয়াল রাখবেন। আর একটু সতর্ক থাকবেন। কোন দরকার হলে ফোন করবেন।
রাস্তায় বেরিয়ে সাইকেল ঠেলে ঠেলে এগুচ্ছে ওরা তিনজন। টাইগার আর পার্বন কথা বলছে কি আর করা যায় এই বিষয়ে। প্রদীপ আলু-অর্জুনের গান গাইছে। হঠাৎ জোরে চিৎকার করে ওঠল কে ওখানে? ঝোপের আড়ল থেকে একজন লোক দৌড় দিল। প্রদীপকে সাইকেলটা ধরিয়ে দিয়ে লোকটার পেছনে দৌড় দিল টাইগার। কিছু দূর গিয়ে কিছুতে বেধে পড়ে গেল ও। এমন সময় সামনে থেকে জ্বলে ওঠল দুটো হেডলাইট। কুয়াশা ভেদ করে তীর বেগে ছুটে আসছে। গড়িয়ে সরে যেত চাইল টাইগার কিন্তু গাড়িটা খুব দ্রুত আসছে।
আস্তে আস্তে উঠল টাইগার। দৌড়ে এল পার্বন, প্রদীপ। নিজেই বিশ্বাস করতে পারছে না যে দেড় ইঞ্চির জন্য বেঁচে গেল মৃত্যর থেকে।
-কি রে ঠিক আছিস তো?
-বোধ হয়। ঠোটের পাশ থেকে রক্ত মুছতে মুছতে বলল টাইগার। পার্বনের দিকে তাকাল।
-ইট ওয়াজ নট এন এক্সিডেন্ট। ইচ্ছে করে এমনটা করা হল। গাড়ির নাম্বারটা আমদের এদিকের নয়।
আস্তে আস্তে উঠল টাইগার। দৌড়ে এল পার্বন, প্রদীপ। নিজেই বিশ্বাস করতে পারছে না যে দেড় ইঞ্চির জন্য বেঁচে গেল মৃত্যর থেকে।
-কি রে ঠিক আছিস তো?
-বোধ হয়। ঠোটের পাশ থেকে রক্ত মুছতে মুছতে বলল টাইগার। পার্বনের দিকে তাকাল।
-ইট ওয়াজ নট এন এক্সিডেন্ট। ইচ্ছে করে এমনটা করা হল। গাড়ির নাম্বারটা আমদের এদিকের নয়।
ঘরে ঢুকে টাইগার দেখল ড্রয়িং রুমে কেউ নেই। মা-বাবা রিডিং রুমে। চুপি চুপি গিয়ে আপুর রুমে ঢুকল। রক্ত দেখে আপু তো মাকে ডেকে ফেলে আর কি। অনেক কষ্টে চুপ করাতে হল। ড্রেসিং করে দিতে দিতে কৈফিয়ত চাইল আপু। প্রথম দিকে বলতে চাইল না ও। কিন্তু আপুর কান টানা খেয়ে সবকিছু খুলে বলল। আপুর চোখ দুটো বড় বড় হয়ে গেল।
নিজের ঘরে খাটে শুয়ে পুরো ঘটনাটা চিন্তা করছে পার্বন। কি রহস্যের মধ্যে জড়িয়ে গেল ওরা। আপাতত কিছুই বোঝা যাচ্ছে না। তবে ক্রিমিনালদের ধরতে কোন পথে এগুতে হবে। কিন্তু কোন পথে। আস্তে উঠে গেল পার্বন। তারপর গিয়ে ঢুকল ওর বাবার স্টাডি রুমে। ওর বাবা একজন প্রফেসর। তার কাছে অনেক ধরনের বই আছে। সেখান থেকে একটা ক্রিমিনোলজি বই এনে পড়তে শুরু করল পার্বন।
প্রদীপ আলু-অর্জুনের মুভি দেখছে আর লাফাচ্ছে।
পরদিন ভোরে ওদের দুজনকে ডেকে তুলল পার্বন ভোরের আলো ফোটার অনেক আগে। তারপর নিয়ে চলল, স্টেশনের দিকে। ওরা কারন জিজ্ঞেস করলে পার্বন বলল, সাধারনত এসব কিডন্যাপ করে থাকে হিউম্যান মাফিয়ারা। ওরা ছোট বাচ্চাদের দিয়ে ভিক্ষা করায়। তাই স্টেশন হচ্ছে এরকম বাচ্চা পাওয়ার আদর্শ জায়গা। এই বাচ্চাদের সাথে কথা বলতে হবে। আর আমার মনে হয়। এই বাচ্চাদের উপর নজর রাখার জন্য দলের কেউ আশেপাশে থাকে। তাই কোন ভাবে যদি তাকে চিনে নিয়ে তাকে ফলো করি তাহলে ওদের ধরা অনেক সহজ হবে। আর শোন লক্ষ রাখবি কোন নতুন বাচ্চা দেখিস কিনা। ওদের সাথে কথা বললে বেশী ভাল হবে।
ওরা যখন স্টেশনে পৌছল তখন কেবল আকাশ ফর্সা হয়েছে। বেশ শীত। কিন্তু ফুটপাতের লোকগুলোর গায়ে গরম জামা নেই। কেউ শীতে ঠকঠক করে কাপছে। কেউ কাগজ কুড়িয়ে এনে আগুন জ্বালিয়ে গরম হওয়ার চেষ্টা করছে। সময়ের সাথে সাথে ভিড় বাড়তে লাগলো। ছোট বুড়ো বিভিন্ন বয়সের ভিক্ষুকরা আসতে লাগল। এর মধ্যে একটা ৪ বা ৫ বছরের একটা ছেলেকে দেখা গেল। তার জামা-কাপড় অনেক পরিষ্কার। সামনে থালা নিয়ে বসে এদিক ওদিক চাইছে। চোখে বিস্ময়। যেন বুঝতে পারছে না কি হচ্ছে। এক লোক ওর থালায় একটা পয়সা ফেলল। ও অবাক হয়ে একবার লোকটার দিকে একবার পয়সাটার দিকে তাকাতে লাগল। টাইগার পার্বনকে ডাক দিল। কিন্তু পার্বনের চোখ রয়েছে একটা অন্য একটা লোকের দিকে। লোকটা বেঞ্চে বসে আছে। গায়ে লাল ঢোলা টি-শার্ট, জিন্সের হাটুর কাছে ছেড়া। চুলের অবস্থা বর্ণনা করা অসম্ভব। হাতে একটা ম্যাগাজিন (উলটো করে ধরা)। লোকটা হাই তুলল। গম্ভীর মনোযোগ দিয়ে লোকটাকে পর্যবোক্ষন করল পার্বন। এই লোকটাই ফিসফিসিয়ে বলল পার্বন। তারপর বলল, শোন টাইগার তুই গিয়ে ওই লোকটার পাশে বসে কথা বলতে থাক। আমি কথা বলব বাচ্চাটার সাথে। আর প্রদীপ অন্যান্য বাচ্চাদের লোকটার দিক পেছন ফিরিয়ে দাড় করিয়ে ছবি তুলবি। আর সুযোগ মত লোকটারও একটা ছবি তুলে নিবি।
তিনজনই এগিয়ে গেল। প্রথমে টাইগার গিয়ে লোকটার পাশে বসল, তার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, আপনি কোথায় যাবেন? কোন ট্রেন ধরবেন? লোকটা ওর দিকে তাকাল চোখদুটো টকটকে লাল। এরপর বেশ কিছুক্ষন ধরে টাইগার চালিয়ে গেল। আড়চোখে দেখল পার্বন সেই বাচ্চাটার সাথে কথা বলছে। এমন সময় প্রদীপ কতগুলো বাচ্চাকে এনে দাড় করিয়ে ছবি তুলতে লাগল। বাচ্চারা খুশিতে লাফাচ্ছে। তখনি কিছু ধনী লোকজন সেখন দিয়ে গেল। লোকটা সেদিকে দেখে অস্থির হয়ে উঠল। তারপর বাচ্চাগুলোর দিকে হিংস্র ভাবে তাকিয়ে রইল। টাইগার দেখল পার্বন এদিকে আসছে। ও উঠল। ওর ওঠা দেখে প্রদীপও সরে এল। তবে পার্বন বাচ্চাটাকে সাথে করে নিয়ে এসেছে। এমন সময় লোকটা দৌড়ে এল। পার্বন ইশারা করল। সাথে সাথে টাইগার লোকটার ঘাড়ে একটা ক্যারাটে চপ বসিয়ে দিল। লোকটা অজ্ঞান হয়ে গেল........।
তিনজনই এগিয়ে গেল। প্রথমে টাইগার গিয়ে লোকটার পাশে বসল, তার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, আপনি কোথায় যাবেন? কোন ট্রেন ধরবেন? লোকটা ওর দিকে তাকাল চোখদুটো টকটকে লাল। এরপর বেশ কিছুক্ষন ধরে টাইগার চালিয়ে গেল। আড়চোখে দেখল পার্বন সেই বাচ্চাটার সাথে কথা বলছে। এমন সময় প্রদীপ কতগুলো বাচ্চাকে এনে দাড় করিয়ে ছবি তুলতে লাগল। বাচ্চারা খুশিতে লাফাচ্ছে। তখনি কিছু ধনী লোকজন সেখন দিয়ে গেল। লোকটা সেদিকে দেখে অস্থির হয়ে উঠল। তারপর বাচ্চাগুলোর দিকে হিংস্র ভাবে তাকিয়ে রইল। টাইগার দেখল পার্বন এদিকে আসছে। ও উঠল। ওর ওঠা দেখে প্রদীপও সরে এল। তবে পার্বন বাচ্চাটাকে সাথে করে নিয়ে এসেছে। এমন সময় লোকটা দৌড়ে এল। পার্বন ইশারা করল। সাথে সাথে টাইগার লোকটার ঘাড়ে একটা ক্যারাটে চপ বসিয়ে দিল। লোকটা অজ্ঞান হয়ে গেল........।
To be continued...
writer:Robin
©Copyright 2017 StorylandBD
we want to read the next part of this story.
ReplyDeleteDear Mahamudul Hasan,
DeleteWe are very happy to know that you like our story. Don't worry as early as possible we published second part. Stay with us and read our story.