writer- Sarmista Setu
"এইদিকে শুনে যা..."
ডিপার্টমেন্টের গেট থেকে আমি আর রিক্তা বের হচ্ছিলাম তাকিয়ে দেখি দুই শয়তান মানে রাইয়ান আর অন্তু পদ্মপুকুরের সামনে দাড়িয়ে দাত কেলাচ্ছে আর আমাদের ডাকছে সাথে আবার লিমাও আছে।অন্তু বলল "চল কোথাও ঘুরে আসি বিকেলের ল্যাব তো আর হচ্ছে না।" "ধুর, এভাবে কিভাবে হুট করে কোথাও যাওয়া যায়?" আমরা ওর কথাটাকে উড়িয়ে দিলাম। পরে দেখলাম ওরা সিরিয়াস আর রিদমও নাকি যাবে। ভেবে দেখলাম বিকেলে তো আর কোনো কাজ নেই যাওয়াই যায়। তখন বাজে ১২:৩০। সিদ্ধান্ত নিলাম ১টায় ডাইনিং করে ১:৩০ টায় রওনা হব। হলে এসে আবার বের হতে হতে ২টা বেজে গেলো।
আমাদের গন্তব্য ছিল যশোর জেলার অভয়নগর উপজেলার একটা ছোট্ট গ্রাম ধুলগ্রাম। ওখানে অনেক পুরাতন কিছু মন্দির আছে। পুরাতন মন্দির বা ইমারত গুলার আর্কিটেকচার অদ্ভুত রকমের সুন্দর থাকে। আমরা যে জায়গায় গিয়েছি সেখানে নাকি একসময় ১২ টা মন্দির একসাথে ছিল নদীর পাড়ে হওয়াতে অধিকাংশ নদীগর্ভে চলে গিয়েছে আর যে দুই তিনটা আছে তাও ভাঙা। রাস্তার দিকের একটা বড় মন্দির এখনো ভাল আছে। রাস্তার দিকের বড় মন্দিরটার সম্মুখভাগ নদীর দিকে অর্থাৎ রাস্তা থেকে মন্দিরগুলার পিছনের অংশ দেখা যায়। জায়গাটা মোটামুটি প্রত্যন্ত অঞ্চলই বলা যায়। আশেপাশে তেমন বাড়িঘর নেই।
যারফলে মানুষজনের কোনো আনাগোনা নেই। মন্দিরের জায়গাটুকু অনেক নীরব। আমাদের ৬ জনের গ্রুপটা বেশ চিল্লাপাল্লা করেই মন্দির প্রাঙ্গণ এ ঢুকলাম। আমরা ঢুকতেই দুইটা দশাসই চেহারার মানুষ ভিতর থেকে বেরিয়ে এলো।আমাদের দেখে প্রায় হুংকার দিয়ে বলল, "এই পোলাপান এখানে কি?" আমরা একটু ভয় পেয়ে গেলাম কিন্তু ভয় পেলে তো আর হবে না তাই মনে সাহস নিয়ে আর একটু ভাব নিয়ে রাইয়ান বলল, "এইতো আমরা একটু ঘুরতে এসেছি। আমরা ভার্সিটিতে পড়ি তো আমাদের একটা সাবজেক্টের জন্য জায়গাটার কয়েকটা ছবি তুলব একটু ঘুরব তারপর চলে যাব। " এবার দ্বিতীয় দশাসই চেহারার মানুষটা কথা বলল যার নাকটা আবার থেবড়ানো, দেখে মনে হয় কেউ ঘুসি দিয়ে বসিয়ে দিয়েছে,"এখানে বেশি ঘোরাঘুরি করা যাবে না।যেখান থেকে এসেছো সেখানে চলে যাও।" অন্তু তার ভালো মানুষের মতো চেহারাটেকে আরো ভালো মানুষের মতো করে বলল, "আংকেল আমরা কয়েকটা ছবি তুলে আর একটু ঘুরেই চলে যাব।" যে প্রথমে কথা বলেছিল সেই মনে হয় দলনেতা। তার একটু দয়া হল মনে হয় সে বলল, "আচ্ছা বেশিক্ষণ না থেকে তাড়াতাড়ি চলে যেও।" আমরা সবগুলা ভালো বাচ্চার মতো মাথা দুলিয়ে চলে এলাম উনাদের সামনে থেকে।
যারফলে মানুষজনের কোনো আনাগোনা নেই। মন্দিরের জায়গাটুকু অনেক নীরব। আমাদের ৬ জনের গ্রুপটা বেশ চিল্লাপাল্লা করেই মন্দির প্রাঙ্গণ এ ঢুকলাম। আমরা ঢুকতেই দুইটা দশাসই চেহারার মানুষ ভিতর থেকে বেরিয়ে এলো।আমাদের দেখে প্রায় হুংকার দিয়ে বলল, "এই পোলাপান এখানে কি?" আমরা একটু ভয় পেয়ে গেলাম কিন্তু ভয় পেলে তো আর হবে না তাই মনে সাহস নিয়ে আর একটু ভাব নিয়ে রাইয়ান বলল, "এইতো আমরা একটু ঘুরতে এসেছি। আমরা ভার্সিটিতে পড়ি তো আমাদের একটা সাবজেক্টের জন্য জায়গাটার কয়েকটা ছবি তুলব একটু ঘুরব তারপর চলে যাব। " এবার দ্বিতীয় দশাসই চেহারার মানুষটা কথা বলল যার নাকটা আবার থেবড়ানো, দেখে মনে হয় কেউ ঘুসি দিয়ে বসিয়ে দিয়েছে,"এখানে বেশি ঘোরাঘুরি করা যাবে না।যেখান থেকে এসেছো সেখানে চলে যাও।" অন্তু তার ভালো মানুষের মতো চেহারাটেকে আরো ভালো মানুষের মতো করে বলল, "আংকেল আমরা কয়েকটা ছবি তুলে আর একটু ঘুরেই চলে যাব।" যে প্রথমে কথা বলেছিল সেই মনে হয় দলনেতা। তার একটু দয়া হল মনে হয় সে বলল, "আচ্ছা বেশিক্ষণ না থেকে তাড়াতাড়ি চলে যেও।" আমরা সবগুলা ভালো বাচ্চার মতো মাথা দুলিয়ে চলে এলাম উনাদের সামনে থেকে।
রিক্তা বলল,"আচ্ছা উনাদেরকে দেখে কেমন ক্রিমিনাল ক্রিমিনাল লাগলো না??" আমিও সাথে সাথে মাথা দুলিয়ে বললাম, "হ্যা আমারো কেমন যেন সুবিধার মনে হল না। আর দেখ নদীর পাশেই মন্দির মংলাবন্দর ও খুব বেশি দূরে না..." "আরে ধুর তোরা ক্রাইম সিরিজ দেখা কমা বুঝলি।"আমার কথা শেষ করার আগেই রিদম আমাকে ধমক মেরে চুপ করিয়ে দিল।আমরাও ভাবলাম হয়তো বেশিই চিন্তা করছি।
আমরা আমাদের মতো ঘুরতে লাগলাম। প্রথম কিছুক্ষণ উনারা আমাদের উপর নজর রাখছিল পরে যখন দেখলো আমরা তেমন কিছু করছি না তখন দলনেতা ওর চেলাকে রেখে কোথায় যেন চলে গেলো। চেলা কানে হেডফোন লাগিয়ে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলো। যেন মোবাইলটাই এখন দুনিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা মন্দিরের চারপাশে ঘুরে ঘুরে দেখছি। দেয়ালে করা প্রত্যেকটা কারুকার্যের বিশ্লেষণ করছি, হাসছি।হঠাৎ করে লিমা আমাদের ডাকলো তাকিয়ে দেখি ও প্রায় ভাঙা একটা মন্দিরের পিছনের দিকে দারিয়ে আছে। আমরা গেলাম ও মন্দিরের ভাঙা একটা অংশ দিয়ে ভিতরে তাকাতে বলল প্রথমে কিছু দেখতে পাচ্ছিলাম না পরে অন্ধকারে চোখ সয়ে যাওয়ার পর দেখতে পেলাম সাদা রঙের কিছু যেন স্তুপ করে রাখা হয়েছে। ভালো করে দেখার জন্য ভিতরে ঢুকতে হবে। তাই রিদমকে পাঠালাম চেলাটার উপর নজর রাখতে আর আমরা সাবধানে মন্দিরটার সামনের দিকে এগিয়ে গেলাম। দরজাকবাট প্রায় খোলাই ছিল,খুলতে গিয়ে হালকা একটু ক্যাচঁকোচঁ শব্দ হল শুধু। ভাগ্যিস ওই লোকের কানে হেডফোন ছিল। তারপর আমরা যা দেখলাম তা নিজের চোখ কে বিশ্বাস করাতে পারছিলাম না।মুভিতে দেখা ড্রাগসের স্তুপের মতো একটা স্তুপ তখন আমাদের চোখের সামনে।
আমরা প্রথমে বুঝতে পারছিলাম না আমাদের কি করতে হবে। তারপর আমি বললাম প্রথমে আমাদের পুলিশের কাছে যেতে হবে। অন্তু গুগল ম্যাপে দেখলো সবচেয়ে কাছের থানাতেও ভ্যানে করে যেতে ১ ঘন্টার উপরে লাগবে। তো আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমি, রিদম, রিক্তা আর লিমা এখানে থাকব চেলাটার উপর নজর রাখব আর রাইয়ান আর অন্তু যাবে থানায় পুলিশ নিয়ে আসতে। পুলিশ যদি আমাদের কথা বিশ্বাস না করে তাই প্রমাণস্বরূপ কয়েকটা ছবি তুলে গুগল ম্যাপ সম্বল করে ওরা বেরিয়ে পড়লো। আশেপাশে কোনো ভ্যানগাড়ি ও নেই। ওরা হাটা শুরু করল। আমরা ৪ টা একজায়গায় দারিয়ে রইলাম।
চেলাটা এতক্ষণ মন্দিরের সামনের চাতালে বসে ছিল, এখন উঠে আমাদের দিকে আসলো আমরা রাস্তার কাছে দারিয়ে ছিলাম । এসে কেমন যেন সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে বলল," তোমরা এখনো এইখানে কি কর?" আমরা অনেক ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যার কারনে কোনো উত্তর দিতে পারছিলাম না।তারপর সে আমাদের দিকে ভাল করে দেখে বলল,"তোমাদের সাথে আরো দুইজন ছিল না? ওরা কই?" আমরা এটারো উত্তর দিতে পারছিলাম না। সবার আগে সামলে নিল রিদম বলল,"এইতো ওরা একটু সামনে গিয়েছে।" চেলাটা বাজের মতো তাকিয়ে থেকে বাজখাঁই গলায় বলল,"সামনে কোথায়?" এইবার আমি বললাম,"খাবার আর পানি আনতে গিয়েছে। আমরা ভাবছিলাম এখানে বসে খেয়ে তারপর চলে যাব।" চেলা কোনো উত্তর না দিয়ে কেমন যেন একটা ভঙ্গি করে তাকিয়ে থাকলো। আমরা অনেক বেশি ভয় পেয়ে গেলাম। চুপ করে পাথরের মতো করে দারিয়ে রইলাম।আমাদের ভাবভঙ্গিতেই চেলার সন্দেহ হয়ে গেলো। সে আমাদের সাথে দারিয়ে রইল। আমরা ফোনে একজন আর একজন কে মেসেজ দিলাম যে চুপ করে থাকলে ওই চেলার সন্দেহ বাড়বে। তাই আমরা আমাদের প্যাঁচাল পাড়া শুরু করলাম উনার সাথেও গল্প জমানোর চেষ্টা করলো রিদম কিন্তু কোনোভাবেই উনার সন্দেহ দূর হল না। ওইদিকে একঘণ্টার উপর হয়ে গিয়েছে। চেলা এইবার জিজ্ঞেস করলো," তোমার বন্ধুরা এখনো আসে না কেন খাবার আনতে কি ঢাকা গেলো নাকি?" ওইদিকে কোন ফাঁকে যেন চেলা তার গুরুকে খবর দিয়ে দিয়েছে। দলনেতা আরো কয়েকজন সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে হাজির। এসেই বলল,"চল ভিতরে চল।"
আমরা যেন পুতুল হয়ে গিয়েছি উনাদের কথামতো ভিতরে চললাম। ভিতরে গিয়ে জিজ্ঞেস করল,"এখন বল তোমরা এইখানে কেন আসছো? তোমাদের বাকি ফ্রেন্ডগুলা কই?" রিক্তা বলল,"আমরা ঘুরতে এসেছি আর ওরা খাবার আনতে গিয়েছে।" "ওদের ফোন দাও দিয়ে বল যেখানে আছে সেখান থেকে যেন তাড়াতাড়ি আসে আর তোমরা এইখানেই বসে থাকো।" লিমা অনেক বেশি ভয় পেয়ে গেল হড়বড় করে বলে বসল,"আমরা কাওকে কিছু বলব না আমাদেরকে ছেড়ে দিন।" এখনো উনারা তেমন কিছু বুঝছিলেন না এখন আর বাঁচার কোনো উপায়ই নাই। এখন দলনেতাটা কেমন যেন ফিচলেমার্কা হাসি দিয়ে বলল "আচ্ছা তাহলে তোমরা সব জেনে গিয়েছ। তাহলে তো এই সব জানার জন্য তোমাদেরকে পুরষ্কার দিতে হয় তাই না?" আমরা বুঝলাম আমরা এই মুহুর্তে কি পরিমাণ বিপদের মাঝে আছি। রিদম কোনোকিছু না ভেবেই ওর পাশে দাড়িয়ে থাকা মানুষটার মুখে ধুম করে ঘুসি বসিয়ে দিল আমরা বাকিরাও একটু বীরত্ব দেখানোর চেষ্টা করলাম। কিন্ত আমরাই বেশি মার খেলাম আর ফলস্বরূপ ওরা আমাদের বেধে ফেলল আমাদের ফোনগুলাও নিয়ে নিল। এইসব করাতে একটা সুবিধা হল আমাদের, আমরা একটু সময় হাতে পেলাম। ওরা হয়তো চলে আসছে কাছাকাছি আবার ভয় পেতে লাগলাম ওদের যদি আসতে দেরী হয়।এখানে যদি আমাদের খুন করে রেখেও যায় কেউ বাচাতে আসবে না।আমার বাসার কথা অনেক বেশি মনে হচ্ছিল। গুন্ডাগুলা বারবার জিজ্ঞেস করেছিল ওরা কোথায় গিয়েছে কিন্তু আমরাও ততক্ষণে অনেক সাহসী হয়ে গিয়েছি আমরা কিছুই বলছিলাম না।
হঠাৎ গাড়ির শব্দ শুনলাম। এক চেলা বাইরে গিয়ে দেখে এসে ভয়ের স্বরে বলল, "ওস্তাদ মনে হয় পুলিশ আসতেছে।"এই প্রথম ওস্তাদের চেহারায় ভয় দেখলাম। সে তাড়াতাড়ি আমাদের ওইখানে ওভাবেই ফেলে রেখে মেঝে থেকে একটা ঢাকনা খুলে নিল, ঘরের এককোণ থেকে একটা দড়ির সিড়ি এনে ওই গর্তের মাঝে ফেলে একে একে সব মাল দিয়ে চেলাদের পাস করে দিয়ে নিজেও চলে গেল আর ঢাকনাটা বন্ধ করে দিল।পরক্ষনেই পুলিশ নিয়ে রাইয়ান আর অন্তু ঢুকল। তারপর রাইয়ান আর অন্তু আমাদের বাধন খুলে দিল আর পুলিশ গিয়ে আমাদের কথামতো সুরঙ্গের মাঝে শয়তান গুলাকে পেয়ে গেল।
বাহ তাহলে তো আপনাদের অনেক সাহস... 🤭🤭
ReplyDeleteThanks for your comment but its just a story
Delete