STRANGE EXPERIENCE-02



Strange Experience-02...

এখন সন্ধ্যা। লোডশেডিং, বাইরে বৃষ্টি হচ্ছে। হঠাৎ আমার মনে পড়ছে একটা ঘটনার কথা। তবে একে দুর্ঘটনা বলা উচিৎ। ভয়ানক দূর্ঘটনা যা আমি কোনদিন ভুলতে পারবো না।
 

সেই দিনটাও ছিল এমন। বিকেলের প্রাইভেট পড়ে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছিল। আকাশে মেঘ, আমি ছাতা নিয়ে বের হয়নি। তাই তাড়াতাড়ি বাড়ি ফিরব। কোনো গাড়ি পাচ্ছি না। তাই হাটছি। লোডশেডিং এর কারনে রাস্তাঘাট অন্ধ্কার। একটা মোড় পেরোচ্ছি। কোনো লোকজন নেই। এমন সময় কে যেন পেছন থেকে ডাকল। ঘুরে দেখি রাফি ডাকছে। বেশ কদিন ধরে ওর সাথে দুটো কথা বলতে না বলতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। রাফি বলল ওদের বাসায় কেউ নেই, ও একা। আন্টি ওর নানাবাড়ি গেছেন। ওর টানাটানিতে বাসায় যেতে হল। তা বেশ কিছুক্ষন ওর সাথে গল্প করলাম। সামনের পরীক্ষা নিয়ে আলোচনা করলাম। বাইরে বৃষ্টির থামার নাম নেই। ভাবলাম আধঘন্টার মধ্যে না থামলে ওর কাছ থেকে ছাতা নিয়ে বেরিয়ে পড়ব। তা আধঘন্টা পর সত্যিই বৃষ্টি একটু কমে এল। তখন একটা ছাতা নিয়ে বের হলাম। বাইরে ভীষণ অন্ধকার। দোতলা থেকে নেমে দেখি গেটে তালা মেরে দেয়া হয়েছে। আবার দোতলায় উঠে গেলাম। রাফিদের দরজায় নক করলাম। একটা মেয়ে দরজা খলল। কি পরিমাণ অবাক হলাম বলার মত না। যাই হোক, একবার ভাবলাম ভুল করে অন্য দরজায় নক করেছি। কিন্তু না ঠিক দরজা ঠিকই আছে। মেয়েটাকে রাফির কথা জিজ্ঞেস করতেই ও বলল, ভেতরে যেতে। রাফির গলাও শুনলাম মনে হল। তা ভিতরে যাওয়ার পর মেয়েটা আমাকে বসতে বলে অন্য রুমে চলে গেল। রাফি এল দু'কাপ কফি নিয়ে। তা আবার বসলাম কফি খেতে। কিছুক্ষণ অন্যমনষ্ক থেকে রাফিকে গেটের কথা বলতে যাব, তাকিয়ে দেখি রাফির জায়গায় বসে আছে সেই মেয়েটি, কফি খাচ্ছে। চার্জার লাইটের আবছা আলোয় নীল রংয়ের জামা পরা মেয়েটিকে বেশ রহস্যময় লাগছে। হঠাৎ দেখি আমি রাফির দিকেই চেয়ে আছি। আশ্চর্য বিষয় এতক্ষণ ধরে ওকে আমি একটা কথাও বলতে পারি নি। রাফি আমার দিকে তাকাল। কিন্তু ওর মুখের জায়গায় রয়েছে সেই মেয়েটির চেহারা। পুরো মুখে এক নিষ্প্রাণ নিষ্ঠুরতা ছিল।  আমি চমকে উঠে দাড়ালাম। কিন্তু হঠাৎ আমার মাথা ঘুরে উঠল। চারদিকটা বন বন করে ঘুরছে। নিশ্চয়ই কফিতে কিছু মেশানো ছিল।
 
আমার জ্ঞান ফিরলে দেখি আমি হসপিটালে। সারা শরীরে ব্যান্ডেজ। শরীর ভীষণ দূর্বল। তারপর শুনলাম সেদিন আমি বাড়ি ফিরছি না দেখে সবাই চিন্তায় পড়ে যায়। আমার বন্ধুদের বাসায় খোজ নিয়ে যখন জানা যায়। আমি কোথাও নেই তখন সবাই পুলিশে খবর দেয়ার কথা ভাবে। এমন সময় আমি অনেক রাতে বাড়ি পৌছাই টলতে টলতে।  আমার গায়ের শার্ট ছেড়া সারা শরীরে রক্ত। ইমিডিয়েটলি আমাকে হাসপাতালে আনা হয়। আমার সারা শরীরে আচড়ের দাগ আর ঘাড়ে কোনো প্রাণীর কামড়ের চিন্হ। আমার শরীরে রক্তশূন্যতা। তাই  ইমিডিয়েটলি ২ ব্যাগ রক্ত দিতে হয়। এরপর প্রায় ৩ দিন পর আমার জ্ঞান ফিরল। আর একটা ব্যাপার হচ্ছে রক্ত দেয়ার সাথে সাথে আমার শরীর থেকে আচড়ের দাগগুলো মুছে যেতে থাকে। কেবল ঘাড়ের দাগটি রয়ে যায়। এরপর আমি জানতে পারি সেদিন রাফি ওর মায়ের সাথে নানা বাড়িতেই ছিল। আর ওদের আশার আগে ওই ফ্লাটে একটা মেয়ে তার বাবা-মার সাথে থাকত। একদিন ওই মেয়েটি বাসায় একা ছিল। সে একটা নীল জামা পরে ছিল। ওইদিন সন্ধ্যায় সে খুন হয়। সেদিনও ছিল লোডশেডিং আর বাইরে হচ্ছিল আঝোরে বৃষ্টি।
©Copyright 2018 storylandbd
STORYLANDBD
STORYLANDBD

This is a short biography of the post author. Maecenas nec odio et ante tincidunt tempus donec vitae sapien ut libero venenatis faucibus nullam quis ante maecenas nec odio et ante tincidunt tempus donec.

No comments:

Post a Comment