ঘুরে আসুন বান্দরবান



ঘুরে আসুন বান্দরবান

শ্বেতবর্ণের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন পুরো পাহাড়। সকালবেলা মনে হবে মেঘ যেন গড়াগড়ি খাচ্ছে পাহাড়ের গায়ে। লাফিয়ে পড়ে পাখি হয়ে উড়তে চাইবে যে কারও মন। শেষ বিকেলে ক্লান্ত সূর্য যখন পাহাড়ের কোলে হেলে পড়ে তখন সৃষ্টি হয় অসাধারণ এক মূহুর্তের।

বলছিলাম বান্দরবানের নীলগিরি পাহাড়ের কথা। যানবাহনের শব্দ, মানুষের হট্টগোল আর সবকিছুকে পাশ কাটিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় (২২০০ ফুট ওপরে)  উঠলেই পাবেন এমন দৃশ্য।

এই বান্দরবানে রয়েছে স্বর্ণমন্দির, শৈলপ্রপাত, চিম্বুক পাহাড়, নীলাচল, বগালেক, মেঘলা পর্যটন কেন্দ্র, প্রান্তিক লেক। আর দেশের ২য় বৃহত্তম কেওক্রাডং পাহাড় তো থাকছেই। সাংগু, মাতামুহুরী, নদীবেষ্টিত আর আঁকাবাঁকা পাহাড়সমৃদ্ধ এ জনপদে বাংলা ভাষাভাষী মানুষসহ রয়েছে ১১টি নৃতাত্বিক জাতিগোষ্ঠী। আর এই নান্দনিক সৌন্দর্য দেখতে  হলে যেতে হবে বান্দরবান।

বান্দরবানের দর্শনীয় স্থান ও বেড়ানোর টিপসঃ

স্বর্ণমন্দির
স্বর্ণমন্দিরঃ বান্দরবানের বালাঘাট এলাকার পুরপাড়া নামক স্থানে রয়েছে দেশের অন্যতম বৃহৎ বৌদ্ধ ধাতু জাদী যা স্বর্ণমন্দির নামে সমধিক পরিচিত। সোনালি রংয়ের অপূর্ব নির্মাণশৈলীর এই স্থানটিকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মানেন তীর্থস্থান হিসেবে। ১৭০টি সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলে দেখা যাবে সাঙ্গু নদীর সৌন্দর্য। মন্দির নির্মাণে রয়েছে দক্ষতার ছাপ। মন্দিরে প্রথমেই চোখে পড়বে বৌদ্ধ মিউজিয়ামে সাজানো গৌতম বুদ্ধের সময়কার বাহারি মূর্তি। সবসময় এই মন্দির দর্শনের জন্য উন্মুক্ত নাও থাকতে পারে তবে বিকাল ৪টা থেকে ৫টা দিকে এটি দর্শনের জন্য খুলে দেওয়া হয়।         

শৈলপ্রপাত স্পটঃ বান্দরবান-রুমা সড়ক হয়ে চিম্বুক যাওয়ার পথে রয়েছে শৈলপ্রপাত স্পট। শৈলপ্রপাতের পাহাড়ি ঝর্ণা দর্শনার্থীদের মন কাড়ে। শৈলপ্রপাতের পাশে উপজাতি তরুণীরা হাতে তৈরি নানা বস্ত্র বিক্রি করে।

নীলাচল 
নীলাচলঃ জেলা সদর থেকে ৪ কিলোমিটার দূরে নীলাচল। দূর থেকে দেখলে মনে হবে নীল আকাশের সঙ্গে মিশে আছে স্থানটি। জনশ্রতি রয়েছে এ কারনেই নাকি স্থানটির নামকরণ নীলাচল। নীলাচলের চূড়া থেকে সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম বন্দরের অপূর্ব আলোকসজ্জা দেখতে পাওয়া যায়। থাকার জন্য এখানে রয়েছে রেস্ট হাউস। মেঘলায় আপনি কম খরচে, কম ঝামেলায় লেক, পাহাড় সবই পেয়ে যাবেন সত্য কিন্তু বান্দরবানের আসল সৌন্দর্যের জন্য নীলাচল বেস্ট। নিশান জীপ নিয়ে যেতে পারেন নীলাচল।      
        
চিম্বুক পাহাড়  

চিম্বুক পাহাড়ঃ চিম্বুক পাহাড়ের খ্যাতি তো বাংলার দার্জিলিং হিসেবে। এর আশপাশে আদিবাসী মুরুংদের বসবাস। দেখতেও অপরুপ এ জায়গা। বান্দরবান থেকে চাঁদের গাড়িতে করে যাওয়া যায় চিম্বুক। সমুদ্র তল থেকে ৩০৫০ ফুট ঊঁচু চিম্বুক পাহাড়। শহর থেকে ২৬ কিঃ মিঃ পাহাড়ি পথ।  আর্মিদের টিনশেড রেস্ট হাউজে থাকার সুবিধা আছে, তবে আগেই তা নিশ্চিত করে যেতে হবে। চিম্বুকের সকালটা খুব সুন্দর! নীচে সাদা মেঘের জমাট মেলা, তার উপরে সকালের সূর্যকিরন!

মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রঃ রাঙ্গামাটির ঝুলন্ত ব্রিজের স্বাদ নিতে চাইলে যেতে হবে এই মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে। উঠতে পারেন ইলেকট্রিক কারে। আপনি যদি হলিডে ইন রিসোর্টে থাকেন তবে পায়ে হেঁটেই যেতে পারেন মেঘলা পর্যটন কেন্দ্রে। ১০ টাকার টিকিট কেটে দেখতে পারবেন লেক, ঝুলন্ত ব্রিজ, একটা মিনি চিড়িয়াখানা।

নীলগিরি
নীলগিরিঃ  সমুদ্র সমতল থেকে ৩৪৬০ ফুট ওপরে মেঘের রাজ্য নীলগিরি এর অবস্থান। বান্দরবান শহর থেকে ৪২ কিঃমিঃ দূরে নীলগিরি। চিম্বুক ছাড়িয়ে থানচি যাবার পথে নীলগিরি। সারাদিন মেঘের ভিতর নীলগিরি।  এখানে থাকার জন্য একমাত্র ব্যবস্থা আর্মিদের ৪টি কটেজ। প্রতিটি কটেজে ৮ জনের থাকার ব্যবস্থা আছে, ভাড়া ৫০০০/- টাকা। তাবুতেও থাকতে পারেন, ভাড়া ১৫০০ টাকা। তবে অবশ্যই আগে বুকিং দিয়ে যেতে হবে।


বগালেক
বগালেকঃ বান্দরবান শহর থেকে ৩৪ কিঃমিঃ দূরে কঙ্কনছাড়া ঘাট। এই ঘাট থেকে বোটে সাঙ্গু নদী দিয়ে দেড় ঘন্টার পথ রুমা বাজার।  রুমা থেকে ১৬ কিঃমিঃ দূরে বগালেক। তবে এখানে যতে হলে রেজিস্টার্ড গাইড নিয়ে যেতে হবে। গাইডকে প্রতিদিনের জন্য দিতে হবে ৩০০/- টাকা।  বগালেকের উচ্চতা ১৭২০ ফুট।

বান্দরবানের পর্যটন স্পটগুলো এতই সুন্দর যে প্রতিটি স্পটে গেলেই ঘর বেঁধে থাকতে মন চাইবে আপনার। কল্পনার সাগরে ভেসে যাবেন আপনি।               
                   
STORYLANDBD
STORYLANDBD

This is a short biography of the post author. Maecenas nec odio et ante tincidunt tempus donec vitae sapien ut libero venenatis faucibus nullam quis ante maecenas nec odio et ante tincidunt tempus donec.

No comments:

Post a Comment